ভ্যাকসিন উৎপাদনে সিনোফার্ম-ইনসেপ্টার সঙ্গে সরকারের চুক্তি সোমবার
চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেশে উৎপাদন করতে যাচ্ছে দেশীয় ওষুধ উ'পাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস। সোমবার বাংলাদেশ সরকার, সিনোফার্ম ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিটিক্যালসের মধ্য এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী, ত্রিপক্ষীয় এই চুক্তিটি আগামীকাল সোমবার রাজধানীর মহাখালীর বিসিপিএস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।
সেখানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত থাকবেন। চীনের পক্ষে থাকবেন ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
এ বিষয়ে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালয়াসের চেয়ারম্যান ও ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুকিত দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "সোমবার প্রাথমিকভাবে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হবে। চুক্তির পর সিদ্ধান্ত হবে ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন উ'পাদন করবে নাকি বাল্কে করে ভ্যাকসিন এনে ফিল ফিনিশ করবে। তবে আমাদের সব ধরণের প্রস্তুতি আছে। কবে নাগাদ উ'পাদন শুরু হবে করা যাবে চুক্তির পর সে সিদ্ধান্ত হবে।"
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, টিকা পেতে চীনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি, যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের বিষয়ে চুক্তি হবে। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের টিকা চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
২০১১ সাল থেকেই ভ্যাকসিন তৈরি করে আসছে ইনসেপ্টা। করোনার ভ্যাকসিন উত্পাদনেও যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।
বাংলাদেশ সিনোফার্মের দেড় কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনেছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিমাসে ভ্যাকসিন দেশে আসছে। এখন পর্যন্ত দেশে সিনোফার্মের ১ কোটি ২৯ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে এসেছে। এর মধ্যে কেনা ৯১ লাখ, চীনের উপহারের ২১ লাখ ও কোভ্যাক্সের আওতায় দেশে এসেছে। চলমান ভ্যাকসিনেশনের কার্যক্রমের একটি বড় অংশ চলছে সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দিয়ে।
সংরক্ষণ সুবিধার কারণে সিনোফার্ম ভ্যাকসিন রাজধানী থেকে ইউনিয়ন পর্যায় সবখানে দেয়া হচ্ছে। দেশে এখন পর্যন্ত সিনোফার্মের অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছে ৭১ লাখ ৩১ হাজার মানুষ আর দুই ডোজ নিয়েছে ৩৮ লাখ ৮১ হাজার মানুষ।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই ভ্যাকসিনের প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়।
কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউট দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে ভ্যাকসিন সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
তখন সরকার অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করে। এপ্রিল মাসে দেশে সিনোফার্ম ও রাশিয়ার স্পুৎনিক-ভি ভ্যাকসিনের ইমার্জেন্সি ইউজ অথোরাইজেশন দেয়া হয়। চীন ও রাশিয়া থেকে কেনার পাশাপাশি দেশে যৌথ উৎপাদনের আলোচনাও তখনই শুরু হয়।