মজুদ পর্যাপ্ত, করোনার কারণে খাদ্য সংকট হবে না: খাদ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশে খাদ্য সংকট হবে না বলে দাবি করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, 'করোনার কারণে খাদ্য সংকট হবে না, পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে, ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অনেক খাদ্য কিনে মজুদ করারও প্রয়োজন নেই।'
বুধবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চলমান বাজার মনিটরিং বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, 'করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে কেউ যদি বাজার অস্থিতিশীল করতে চায়, বাড়তি সুবিধা নিতে চায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ যদি মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। চালের প্রচুর মজুদ আছে। কাউকে অযথা দু-তিন মাসের চাল মজুদ করার দরকার নেই।'
করোনাভাইরাসের জন্য চাল-গম নিয়ে ভোক্তাদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোনো ব্যবসায়ী বা মিলার যদি বর্তমান পরিস্থিতিকে পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে তাহলে সরকার কোনোক্রমেই চুপচাপ বসে থাকবে না। 'আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। শুধু মজুদই নয়, আমরা ওএমএসে চাল বিতরণের জন্য মিলারদের চিঠি দিয়েছি। তারা চাল নিয়ে বাজারে বিক্রি করবেন। এবং আমাদের আটা বিক্রি সব সময় চলছে, চলবে।'
মন্ত্রী জানান, এ মুহূর্তে দেশে ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৪৯৫ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে। যার মধ্যে গম ৩ লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন, বাকি সব চাল। গত বছর এ মজুদের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন।
'প্রকৃত ব্যবসায়ী ও মিলারদের উচিত মানবতার প্রশ্নে আরও সেবা করা। সেখানে কেউ এটা (করোনা পরিস্থিতি) নিয়ে বাড়তি সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সে বিষয়ে নজর রাখবে। আমরা মনিটরিং আরও জোরদার করছি। রোজাকে সামনে রেখে যাতে কোনো প্রকারের অবৈধ ব্যবসা কেউ করতে না পারে আমরা সে ব্যাপারে সচেষ্ট আছি। ভোক্তাদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কেউ মজুদ করে (ভোক্তাদের) কষ্টে ফেলার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ আমরা বাইরে থেকে চাল আমদানি করব। চালের দাম আমরা বাড়তে দেব না,' যোগ করেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তার মতে, ২৫ দিন পর হাওরের ধান পাওয়া যাবে। সুতরাং চিন্তার কোনো কারণ নেই।
অতিরিক্ত খাদ্য কিনে মজুদ করা ভোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'কোনো চালের সংকট নেই। অযথা বাড়তি চাল ক্রয়ের প্রয়োজন নেই। ব্যবসায়ীরা বাজে কথা বলে করোনার অজুহাত দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। আমাদের ২৫টি মনিটরিং টিম আছে। প্রয়োজনে তা আরও বাড়াবো। শুধু খাদ্য মন্ত্রণালয় নয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর সেলও মনিটরিং করছে। আমরা শক্ত অবস্থানে আছি।'
বাড়তি খাদ্য বিক্রি না করার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো বার্তা দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, 'এ বার্তার চিঠি আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুত করেছি। আমরা স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ী এবং এফবিসিসিআইসহ সব জায়গায় চিঠি দিচ্ছি। আমরা অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরতে পারলে কী ধরনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে আপনারা তা জানতে পারবেন। যে শাস্তি হবে তাতে আপনারা বাহবা দেবেন।'