মামুনুল গ্রেপ্তারের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।
দুপুর থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রোববার দুপুর তিনটা থেকে জেলা শহরের প্রধান সড়কগুলোতে র্যাবের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
তবে পুলিশের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, লকডাউনের জন্যই এই পুলিশি মহড়া।
পুলিশের মহড়া সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, 'লকডাউন কার্যকরে আমাদের পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য চলমান কার্যক্রমেরই অংশ এই মহড়া।'
যে কেনো অপ্রীতিকর ঘটনা কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
এর আগে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের পর গত ৯ এপ্রিল পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ জেলার সকল থানা, ফাঁড়ি, ক্যাম্প ও তদন্ত কেন্দ্রগুলোতে এলএমজি পোস্ট বসানো হয়।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে সফরের বিরোধিতা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী সমর্থকরা। তারা সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
২৬-২৮ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের হওয়া ৫৫টি মামলায় রোববার সকাল পর্যন্ত ২৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
২৭ মার্চ সদর উপজেলার নন্দনপুরে হেফাজতের বিক্ষোভ চলাকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে ২৫ জন পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন, মারা গেছেন অন্তত পাঁচ জন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় বিক্ষোভ করছিলেন তারা।
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য জেলায় মোদি বিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে পর দিন হেফাজতের দেশব্যাপী ভোর-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালীন সময় হেফাজতের নেতাকর্মীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভূমি অফিস সহ তিনটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের তালশহর রেল স্টেশনে একটি চাট্টগ্রামগামী ট্রেনে হামলা চালায় তারা।
এছাড়াও হেফাজত সমর্থকরা সদর উপজেলার জেলা পরিষদ ভবন, পৌরসভা ভবন, পুলিশ লাইনস, ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন সংগীত একাডেমী, এবং ফুয়ের্তলা বাস স্ট্যান্ড সহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়ে কয়েকজন সাংবাদিককে আটকে রাখার ঘটনা ঘটায় হেফাজত সমর্থকরা।