পণ্য-কাঁচামাল আমদানিতে চীনের বিকল্প খোঁজা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে চীনের বিকল্প খুঁজছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা জানান। খবর বাসস ও ইউএনবির।
চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে দেশটির মূল ভূখণ্ডে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশটির অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ রয়েছে।
এমন বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী জানান, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বাংলাদেশ সতর্ক অবস্থানে আছে। এই ভাইরাস যাতে বাংলাদেশে সংক্রমিত না হয়, সে লক্ষ্যে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
চীনের বিকল্প খোঁজা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিকল্প আমদানি উৎস খুঁজছি এবং এসব দেশ থেকে আমদানি করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর মাঝে ওষুধ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালও আছে।’
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সংকটের গুজব নিয়ে জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান।
চীন থেকে আদা, রসুন, ছোলাসহ রান্নায় ব্যবহৃত নানা মসলা আমদানি করা হয়। এসব পণ্যের দাম বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, অনেক মানুষ গুজব শুনে আতঙ্কিত হয়ে প্রচুর পরিমাণে এসব পণ্য কিনে রাখছেন। ইতোপূর্বে পেঁয়াজ সংকটের সময়েও এমন প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু যারা বেশি পরিমাণে কিনেছিলেন, পরবর্তী সময়ে তারা পেঁয়াজ পচে যাওয়ায় তা নদী, পুকুর আর খালে ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
‘তাই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কারো আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা সম্পূর্ণ পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রাখছি এবং বিকল্প উৎস হিসেবে কোন কোন দেশ থেকে কোন পণ্য আমদানি করা যায় এবং দেশে বর্তমান মজুদ কত, সরকার সব দিক মনিটর করছে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ভাষণে আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ সুষম রাখার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য জনগণের নাগালের মধ্যে রাখতে সংশ্লিষ্ট মহলকে নির্দেশনা দেন তিনি।
মুজিববর্ষ পালনে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ
সংসদ অধিবেশনের পর মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিববর্ষ উদযাপনকালে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি না করতে দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত এক সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘মুজিব বর্ষ উদযাপনে কোনো রকম বাড়াবাড়ি করবেন না।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমোদন ছাড়া জাতির পিতার কোনো ম্যুরাল স্থাপন না করতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
সভায় তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর দুঃস্বপ্নের দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পর অনেকের ভূমিকা সম্পর্কে আমরা জানি। তাই বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমতি ছাড়া জাতির পিতার কোনো ম্যুরাল স্থাপন করবেন না।’