মুন্সিগঞ্জে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, পদ্মা সেতু প্রকল্পের ৯ কর্মী আটক
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া চৌরাস্তায় শুক্রবার সকালে চোর সন্দেহে জুলহাস হাওলাদার (৩৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সকাল ৬ টার দিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নিরাপত্তা ও শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত কর্মীরা ওই যুবককে পেটান।
খবর পেয়ে স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে যুবককে উদ্ধার করে। পরে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত ৯ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত জুলহাস উপজেলার কুমারভোগ পদ্মা সেতু পুর্নবাসন কেন্দ্রের হাসান হাওলাদারের ছেলে। তিনি ছিলেন অটোরিকশা চালক। আটককৃতরা হচ্ছেন- পদ্মা সেতুর নিরাপত্তাকর্মী ও শ্রমিক সেলিম, রাব্বি, তপু, আল-আমিন, আরিফ, আব্দুল মান্নান, ইস্রাফিল, রুবেল ও সুশান্ত।
লৌহজং থানার ওসি আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'নিজ বাড়ির অদূরে মাওয়া চৌরাস্তাস্থ পদ্মা সেতু প্রকল্পের ভেতর গেলে যুবক জুলহাসকে চোর সন্দেহে আটক করেন নিরাপত্তাকর্মী ও শ্রমিকরা। এ সময় ১০-১২ জন মিলে ওই যুবককে লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটান। খবর পেয়ে স্বজনরা যুবককে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।'
শ্রীনগর-লৌহজং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, 'পদ্মা সেতুর এফ ফোর পিলারের নিচে যুবককে পেটান নিরাপত্তাকর্মীরা। এতে যুবকের মৃত্যু হয়। ঘটনা জানার পরপরই পুলিশ অভিযানে নামে। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা ও শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত ৯ কর্মীকে আটক করতে সক্ষম হয়।'
নিহত যুবকের বোন শাহানা বলেন, 'আমার ভাই পদ্মা সেতুর প্রকল্পের ভেতর কীভাবে গেল, জানি না। আমরা খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাকে ফেলে রাখা হয়েছে। এর আগে তাকে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের বলেন, আমার ভাই নাকি চুরি করেছে। পরে আমরা ভাইকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। এ সময় সেখানকার ডাক্তার আমার ভাই মারা গেছেন বলে জানান।'
শাহানা আরও বলেন, 'আমার ভাই চোর না। অটোরিকশা চালায়। আর চুরি করলেই কি পিটিয়ে হত্যা করতে হবে?'