মেজর সিনহা হত্যা: সিফাতের মুক্তি দাবির মানববন্ধনে পুলিশের লাঠিচার্জ
কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদের মৃত্যুর পর তার সঙ্গে থাকা, গ্রেফতার ও কারাবন্দি শাহেদুল ইসলাম সিফাতের মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে অন্তত ১০ আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া কারাবন্দি সিফাতের নানা বামনা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী হাওলাদারকে গালমন্দ করার পাশাপাশি হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
এদিকে লাঠিচার্জ করে মানববন্ধন ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পর মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের 'দুস্কৃতিকারী' বলে আখ্যা দিয়েছেন বামনা থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার দুপুর ১২টায় সিফাতের নিজ গ্রাম বরগুনার বামনায় মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করে সিফাতের সহপাঠিরা। বামনার কলেজ রোড সড়কে শান্তিপূর্ণভাবে চলা মানববন্ধনে হঠাৎ পুলিশের একটি টিম এসে ব্যানার ফেস্টুন ছিনিয়ে নেয়।
এরপরও শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল মানববন্ধন কর্মসূচি। এ সময় বামনা থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন মানববন্ধনস্থলে এসে অংশগ্রহণকারীদের গালমন্দ শুরু করে লাঠিচার্জের নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে মুহূর্তেই শান্তিপূর্ণভাবে চলা মানববন্ধন পণ্ড হয়ে যায়। লাঠিচার্জ করেন ওসি নিজেও।
পুলিশের লাঠিচার্জে আহত মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা রুবেল বলেন, সিফাত খুবই ভালো ছেলে। আর যাই হোক, সিফাতের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ কোনোভাবেই যায় না। এ ছাড়াও 'মিথ্যে মামলায় নির্দোষ' সিফাত জেলে থাকায় ওর মুক্তির জন্য মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছিলাম।
'পুলিশ প্রথমে আমাদের মানববন্ধনের ব্যানার ফেস্টুন ছিনিয়ে নেয়। এরপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছিলাম। পরে বামনা থানার ওসি এসে আমাদের উপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে', যোগ করেন তিনি।
'সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করায় পুলিশ আমাদের দুঃস্কৃতিকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। এ ছাড়াও নাতির মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে আসায় সাংবাদিকদের সামনে সিফাতের নানা আইয়ুব আলী হাওলাদারকে গালমন্দ করার পাশাপাশি হুমকি দেয় পুলিশ', বললেন রুবেল।
এ বিষয়ে সিফাতের নানা আইয়ুব আলী হওলাদার বলেন, 'পুলিশ আজ যা করেছে তা মোটেও ঠিক হয়নি।'
বামনা থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন বলেন, 'আমাদের অনুমতি না নিয়ে একদল দুস্কৃতিকারী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছে বলে আমি জানতে পারি। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে বলে মানববন্ধন বন্ধ করে দিয়েছি।'
মানববন্ধন চলাকালীন সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিফাতের নানা বামনা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী হাওলাদার, সিফাতের স্বজন, সহপাঠি ও এলাকাবাসী। এ সময় তারা সিফাতকে পুলিশের দায়ের করা মামলা থেকে দ্রুত অব্যাহতি দেওয়ার পাশাপাশি কারামুক্তির দাবি জানান।