রংপুরে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে অগ্নিসংযাগের ঘটনায় ১০ আসামি রিমান্ডে
ফেসবুকে কাবা শরীফ নিয়ে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে রংপুরের পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় গ্রেফতারকৃত আরও ১০ জনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আসামিদের রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক ফজলে এলাহীর আদালতে তুললে তিনি দুপুরে এই আদেশ দেন। এ নিয়ে হামলার ঘটনায় ৬০ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রংপুর পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, "রংপুরের পীরগঞ্জে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতরা কেউ ছাড় পাবে না। এ পর্যন্ত এই ঘটনায় ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর তাদের মধ্যে ৫০ জনকে তিন দিন ও ১০ জনকে দুই দিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। বাকিদের আদালতে রিমান্ড চাওয়া হবে।
এর আগে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর থেকে নতুন করে গ্রেফতার করা মামুন মন্ডল এবং ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে চাওয়া পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পীরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর মাহবুবুর রহমান জানান, দুপুরে তাদের রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক ফজলে এলাহীর আদালতে হাজির করা হলে ১০ জনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
পুলিশ জানায়,গ্রেফতারকৃত মামুন ও ওমর ফারুকের দলীয় পদ-পদবী না থাকলেও তারা জামায়াত-শিবিরের সমর্থক।
এর আগে গত রোববার সন্ধায় র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার ঘটনার মূল হোতা কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের বহিস্কৃত নেতা সৈকত মন্ডল ও তার সহযোগী রবিউল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন।
এনিয়ে হামলার ঘটনায় ৭ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এছাড়াও এ ঘটনায় তিন দিনের রিমান্ডে থাকা ৫০ জনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের করা দুটি ডিজিটাল নিরাপত্তা ও র্যাবের করা একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হলো। এর মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পরিতোষ সরকারসহ ৭ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর রাতে ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উগ্রবাদীরা।
এ ঘটনায় গ্রামটির ১৫টি পরিবারের ১৮টি বাড়ির সবকিছু আগুনে পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে অন্তত ৫২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। হামলাকারীরা গরু-ছাগল, অলঙ্কার ও নগদ টাকাও নিয়ে গেছেন বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে করা তিনটি মামলায় এখন পর্যন্ত ৭০ জন গ্রেফতার হয়েছেন।এর মধ্যে সর্বমোট ৬০ আসামিকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।