রাজশাহীতে ৫৩ চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত
রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত ৫৩ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এর মধ্যে ১০ জন চিকিৎসক, ১৯ জন নার্স, দুইজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ২২ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। তারা সবাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন এবং উপজেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত অবস্থায় আক্রান্ত হন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছয়জন ইন্টার্ন চিকিৎসক, ১৮ জন নার্স ও চারজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস।
তিনি জানান, 'সবার শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। আক্রান্তদের মধ্যে অনেকে হাসপাতালের করোনা চিকিৎসায় নির্ধারিত কেবিন ও ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা নিজ নিজ বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।'
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবের একজন চিকিৎসক, দুইজন টেকনোলজিস্ট ও দুইজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ল্যাব ইনচার্জ ও ভাইরালোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাবেরা গুলনাহার।
তিনি জানান, 'ল্যাবের প্রধান দুই টেকনোলজিস্টের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। এখন ঢাকা থেকে পাঠানো টেকনোলজিস্টের উপর নির্ভর করে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তা না হলে ল্যাব বন্ধ করে দিতে হতো। আক্রান্তরা বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।'
এছাড়া রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একজন স্বাস্থ্যকর্মী ও ৯ জন স্বাস্থ্য বিভাগের স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন ভেটেরিনারি সার্জনও রয়েছেন।
সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. এফ এম এ আঞ্জুমান আরা জানান, সবার শারীরিক অবস্থা ভালো। সবাই বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, রাজশাহীর ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দুইজন চিকিৎসক, একজন নার্স ও সাতজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারা সবাই সুস্থ আছে। বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রোববার দুপুর পর্যন্ত দেওয়া তথ্যমতে, রাজশাহীতে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত ৫১৩ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী মহানগরে ৩৫৫ জন।
এছাড়াও বাঘায় ১৭, চারঘাটে ১৯, পুঠিয়ায় ১২, দুর্গাপুর ৭, বাগমারায় ২০, মোহনপুরে ২৩, তানোরে ২৪, পবায় ৩৩ এবং গোদাগাড়ীতে তিন জন আক্রান্ত।
রাজশাহী জেলায় সরকারি হিসেবে শনিবার পর্যন্ত মারা গেছেন সাতজন। এর মধ্যে নগরীতে তিনজন, বাঘায় একজন, চারঘাটে একজন, মোহনপুরে একজন ও পবায় একজন।
জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৬৮ জন। এর মধ্যে নগরের ১৫, বাঘায় চার, চারঘাটে ৭, পুঠিয়ায় ৯ জন, দুর্গাপুরে তিনজন, বাগমারায় পাঁচ, মোহনপুরে পাঁচ, তানোরে ১৩, পবায় ছয় এবং গোদাগাড়ীর একজন বাসিন্দা রয়েছেন।
রাজশাহীতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১২ এপ্রিল। এরপর থেকেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৫১৯ জন। এর মধ্যে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৩৯৪ জন। আর প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে রয়েছেন পাঁচজন। ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৫৫ জনকে। ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে দুই হাজার ৫৪ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন একজন।