রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের অনশন কর্মসূচি অব্যাহত
পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ, মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া মজুরি ও বেতন পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনা এবং রাজশাহীর রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। গণঅনশনকে কেন্দ্র করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকলেও রাজশাহীতে শ্রমিকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট।
খুলনায় অনশনকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে পুলিশ
কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দৌলতপুর জুট মিল ও স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা বিআইডিসি রোডের প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের গেইটের পূর্ব পাশে ও প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের শ্রমিকরা মিলের পশ্চিম গেটে প্যান্ডেল করে অনশন পালন করেন। এছাড়া ক্রিসেন্ট গেইট ও খালিশপুর জুট মিল গেইটেও অনুরূপ প্যান্ডেল করে অনশন করছেন স্ব স্ব মিলের শ্রমিকরা।
একই সঙ্গে আটরা শিল্পাঞ্চলের আলিম ও ইস্টার্ন জুট মিলের শ্রমিকরাও তাদের মিলগেইটে অনশন কর্মসূচি পালন করেন।
মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে খালিশপুর বিআইডিসি রোড, আটরা ও রাজঘাট এলাকার খুলনা-যাশোর মহাসড়কে শ্রমিকরা এ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
এদিকে, পাটকল শ্রমিকদের অনশন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
খালিশপুর থানার ওসি সাব্বিরুল আলম বলেন, পাটকল শ্রমিকদের গণঅনশনকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পাটকলগুলোর সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আন্দোলনরত একজন শ্রমিক বলেন, তীব্র শীতের মধ্যে আমরা কাঁথা-বালিশ নিয়ে ফের আমরণ গণঅনশনে বসেছি। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত উঠবো না।
আলীম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম লিটু বলেন, ‘‘রোববার দুপুর থেকে অনশনে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। প্রয়োজনে মৃত্যু হলেও পরোয়া নেই।’’
রাজশাহীতে শ্রমিকদের সঙ্গে সাংসদের একাত্মতা ঘোষণা
১১ দফা দাবিতে রোববার দুপুর থেকে আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছে রাজশাহীর পাটকল শ্রমিকরা। সোমবার সকালে রাজশাহী জুটমিলের আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য দেন রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা।
এ সময় তিনি শ্রমিকদের দাবি দাওয়া মেনে নিতে সরকারকে অনুরোধ জানান। তিনি আগামী সংসদ অধিবেশনে শ্রমিকদের দাবি দাওয়া নিয়ে কথা বলবেন বলেও শ্রমিকদের আশ্বাস দেন।
রাজশাহী জুট মিলসের সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জিল্লুর রহমান জানান, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারীর সিদ্ধান্ত বাতিল, কাঁচা পাট কিনতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধসহ ১১ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চলবে।
এর আগে ১১ দফা দাবিতে ১০ ডিসেম্বর থেকে অনশন কর্মসূচির ডাক দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ। অনশন কর্মসূচির চতুর্থ দিনে রাত ১২টায় শ্রম প্রতিমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন স্থগিত ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে ১৫ ডিসেম্বর বিজেএমসিতে ও ২৬ ডিসেম্বর শ্রম মন্ত্রণালয়ে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দাবির ব্যাপারে কোনো সমাধান না হওয়ায় আবারও অনশন কর্মসূচির ডাক দেয় সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।