রায় দ্রুত কার্যকর চান নুসরাতের পরিবার
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ১৬ আসামির সবার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার রায় দ্রুত কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় নুসরাতের মা বলেন, ‘প্রথমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেক খুশি।’
ইউএনবি জানায়, শিরিন আক্তার মিডিয়া ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি চাই, অতিদ্রুত যেন রায় কার্যকর হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগেও আমাদের পাশে ছিলেন। এখনও আমাদের পাশে থাকবেন। তিনি আমাদের বলেছেন, নুসরাত হত্যায় কেউ ছাড় পাবে না। আমি তাঁর জন্য মন থেকে অনেক দোয়া করি।’
প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ মিডিয়ার সবাইকে তাঁর কন্যার হত্যার বিচার চাওয়ার জন্য দোয়া করার কথা বলে ধন্যবাদ জানান তিনি।
নুসরাত হত্যার রায় প্রসঙ্গে তার বাবা বললেন, ‘আমরা খুশি। তবে উচ্চ আদালতেও যেন এ রায় বহাল থাকে সেটা চাই।’
দণ্ডপ্রাপ্তদের রায় কার্যকরের আগে তাঁর পরিবারের নিরাপত্তাও চাইলেন তিনি।
এদিকে, নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, রায়ের পরপর আদালত চত্বরেই তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে রায়ে সন্তুষ্ট নোমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌননিপীড়নের অভিযোগে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। পরে ৬ এপ্রিল অধ্যক্ষের সহযোগীরা মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় নুসরাতকে। তারপর তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে মৃত্যুশয্যায় বলে গেছেন নুসরাত। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে তিনি মারা যান।
৮ এপ্রিল নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পর সেটি হত্যা মামলায় পরিণত হয়।