রিফাত হত্যা মামলার রায় আজ, বরগুনায় নিরাপত্তা জোরদার
বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামীর রায় ঘোষণা করা হবে আজ। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ আছাদুজ্জামানের এ রায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে। আলোচিত এই রায়কে ঘিরে জেলা ও উপজেলা শহরসহ, আদালত এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ভূবন চন্দ্র হালদার বলেন, 'রিফাতের রায়ের দিকে গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছে। প্রত্যেক আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে আমরা আশাবাদী।'
রায়কে ঘিরে মঙ্গলবার রাত থেকে বরগুনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সজাগ দৃষ্টি রাখছে পুলিশ। জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। এছাড়া র্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও টহল দিচ্ছে বরগুনায়।
সরেজমিনে ঘুরে বরগুনার টাউনহল বাস স্ট্যান্ড, স্টেডিয়াম বাস স্ট্যান্ডসহ কলেজ রোড, কালিবাড়ি, বটতলা, জিলা স্কুল মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ে একাধিক পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বপালনরত অবস্থায় দেখা গেছে। তারা সন্দেভাজন যানবাহন তল্লাশীর পাশাপাশি সজাগ দৃষ্টি রাখছেন জনসাধারণের গতিবিধির উপর।
রায় ঘিরে যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) বলেন, 'রায় ঘিরে বরগুনায় আমরা ব্যাপক নিরাপত্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বিশষ করে আদালত প্রাঙ্গণে থাকবে আমাদের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সরকারি গাড়ি ছাড়া কোনও যানবাহন আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবে না।'
রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ আসাদুজ্জামান রায়ের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঘটনার পরের দিন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। ওই বছর ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দু'ভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক।
গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে এ মামলায়।