শ্রমিক ধর্মঘটে অচল ভোমরা বন্দর, কাঁচামাল আমদানি বন্ধ
ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের অসন্তোষের জের ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে। টানা পাঁচদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বন্দরে ভারত থেকে আমদানিকৃত ট্রাক থেকে পণ্য খালাস।
এদিকে, ব্যবসায়ীরা সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সব ধরনের পচনশীল কাঁচামাল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন।
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধাক্ষ্য মাকসুদ খান জানান, গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) থেকে ভারত থেকে আমদানিকৃত কোনো পণ্যবাহী ট্রাক আনলোড করছেন না শ্রমিকরা। ফলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার থেকে আমদানিকারকরা ভারত থেকে পচনশীল কাঁচামাল পেঁয়াজ, আদা, ফল, পান, মাছ- এসব আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধুমাত্র পাথর আমদানি করা হচ্ছে।
এদিকে, সাতক্ষীরার আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতি প্রয়োজনীয়সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ করে বন্দর সচল করার দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে, বন্দরের শ্রমিকরা তাদের দাবির পক্ষে অনড়। মজুরি বৃদ্ধি না করলে তারা কাজ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
ভোমরা স্থলবন্দরের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, 'ট্রাকপ্রতি শ্রমিক ঠিকাদাররা তাদের বিল দেন ৩৮০ টাকা। প্রায় ৪০ টন পণ্য খালাসে এই টাকা খুব নগণ্য। সংসার চালাতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। ট্রাকপ্রতি ৫০০-৭০০ টাকা বকশিস দিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ এই বকশিসের টাকাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে মজুরি কম পাওয়ায় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাছাড়া ব্যবসায়ীরাও আমাদের ডাকছেন না।'
সাতক্ষীরা আমদানিকারক সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. আবু হাসান বলেন, 'বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারের দায়িত্ব শ্রমিক সরবরাহ করা। আমরা শ্রম মজুরি আগেই বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিশোধ করলেও ঠিকাদার শ্রমিক দিচ্ছেন না। ফলে ভোমরা বন্দর অচল হয়ে পড়েছে। ট্রাক থেকে পণ্য খালাস না হওয়ায় আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'ভোমরা বন্দর ষড়যন্ত্রের মুখে পড়েছে। ভোমরা বন্দর থেকে প্রতি বছর ১২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হচ্ছে। বন্দরের ওপর ৫০ হাজার মানুষ নির্ভরশীল। শ্রমিক রয়েছেন কমপক্ষে পাঁচ হাজার।'
ভোমরা বন্দর পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, 'ঠিকাদারকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।'