সিঙ্গাপুরে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে গেলেন এক বাংলাদেশি শ্রমিক
বাংলাদেশের একজন অভিবাসী শ্রমিক সিঙ্গাপুরে তার মালিক এবং ডরমিটরি অপারেটরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে তাকে ৪৩ ঘন্টা একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়।
রহমান মোহাম্মদ হাসিবুর তাদের বিরুদ্ধে 'আটকে' রাখার অভিযোগ করে ক্ষতিপুরণ হিসেবে ৩,০০০ মার্কিন ডলার দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, মালিক কর্তৃপক্ষ এবং ডরমিটরি অপারেটরের এই আচরণ তাকে এবং তার সহকর্মীদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে দেয়।
সিঙ্গাপুরে ঠাসাঠাসি করে বসবাস করা নিম্ন আয়ের অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে এ পর্যন্ত ভাইরাস সংক্রমণের ৫৮,০০০ ঘটনা পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুর একটি বিত্তশালী দেশ হয়ে অভিবাসী শ্রমিকদের এভাবে অপরিসর ডরমিটরিতে মানবেতর পরিবেশে থাকতে বাধ্য করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
রহমান মোহাম্মদ হাসিবুর জানান, জয়লিশাস ম্যানেজমেন্ট নামে একটি কোম্পানি ডরমিটরি পরিচালনা করে, ১৯ এপ্রিল তাকে সহ এরকম আরও ২০ জন কর্মীকে শ্রমিকদের একজন ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন মনে করে রুমে বন্দি করে রাখা হয়, আর সংক্রমিত হয়েছে সন্দেহ করা শ্রমিককে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
বাথরুম ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে পাহারারক্ষীকে সঙ্গে নিয়ে যেত হত। রুমের কয়েকজনের জ্বরে আক্রান্ত ছিল, রুমের ভেতরটা গরম এবং বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা ছিল না।
হাসিবুর অভিবাসীদের সহায়তা দেয় এরকম একটি এনজিও টিডব্লিওসি ২-এর সঙ্গে যোগাযোগের পর শ্রমিকদের আরেকটি রুমে এনে রাখা হয়, এই রুমের সঙ্গে (এটাচড) বাথরুম রয়েছে, তবে এই কক্ষটিও বাইরে থেকে তালা দেওয়া থাকত। এই ঘরে তাদের ৪৩ ঘন্টা আটকে ছিল।
"অভিযোগকারী এবং তার সঙ্গের শ্রমিকদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং মৌলিক মানবাধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে," হাসিবুর অভিযোগে বলেছেন।
ডরমিটরিটি পরিচালনায় থাকা জয়লিশাস ম্যানেজমেন্ট শ্রমিকদের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ভি স্পেক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড সাপ্লাইজের সম্মতিক্রমেই কর্মীদের এভাবে আটকে রেখেছিল, তদন্তে পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার পর বাংলাদেশে ফিরে আসা হাসিবুর মনে করেন তার নিয়োগকর্তা এবং ডরমেটরি অপারেটর তাকে এবং তার রুমমেটদের করোনা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়ে মানসিকভাবে কষ্ট দিয়েছেন।
"আমার জয় হওয়া উচিত, আমি মনে করি আমার এই উদ্যোগের কারণে আমার নিয়োগকারী এবং ডরমিটরি অপারেটর শ্রমিক ও ডরমিটরিতে যারা আছে তাদের সঙ্গে এ আচরণ করতে পারবে না।" এক মন্তব্যে বলেন হাসিবুর।
জয়লিশাস ম্যানেজমেন্টের প্রতিনিধি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। অন্যদিকে ভি স্পেকের মন্তব্য পেতে ইমেইল করে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
সূত্রঃ এশিয়া নিউজ