সড়কে অবৈধভাবে থাকা নির্মাণসামগ্রী নিলামে তুলতে শুরু করেছে ডিএনসিসি
সড়ক ও ফুটপাতে অবৈধভাবে থাকা নির্মাণসামগ্রী নিলামে তুলতে শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)। সোমবার ডিএনসিসি এলাকার সড়ক ও ফুটপাতে অবৈধভাবে রাখা সামগ্রী উচ্ছেদ ও নিলামে ১০টি অঞ্চলে একযোগে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালিত হয়।
এদিন সকাল সাড়ে নয়টায় গুলশানে ফুটপাত ও সড়ক থেকে অবৈধ নির্মাণসামগ্রী ও স্থাপনা জব্দ ও নিলাম কার্যক্রম পরিদর্শনকালে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, 'যত ক্ষমতাবানই হোন না কেন, এই শহরের ফুটপাতে কোনো ধরনের নির্মাণসামগ্রী বা অন্য কোনো সামগ্রী রেখে ব্যবসা করতে পারবেন না।'
'ঢাকা শহর আমাদের সকলের, আমাদের আদরের। এই ঢাকা শহরে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। ঢাকা শহরকে যত্রতত্রভাবে শেষ করে ফেলবেন, এটি হতে দেওয়া যাবে না,' বলেন মেয়র।
তিনি এদিন গুলশান ৮৬, ৮৭, ৬৭ নম্বর রোড এবং বনানী ১৫ নম্বর রোড পরিদর্শন করে ফুটপাত ও সড়কের ওপর রড, ইট ইত্যাদি দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হন। পরে ডিএনসিসির মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ভবন নির্মাণকারীদের জরিমানা এবং নির্মাণসামগ্রী তাৎক্ষণিক নিলামে বিক্রি করা হয়।
এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, 'আপনারা দেখেছেন, আমি গত আশুরার দিন, রোববার সকাল বেলা বিভিন্ন এলাকায় যাই। তখন দেখেছি ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ইট, বালি, রডসহ বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রী রাস্তায়, ফুটপাতে রেখে দিয়েছে। তখন আমরা বলেছিলাম, ৭ তারিখ, অর্থাৎ আজকে থেকে দশটি অঞ্চলে একযোগে সারাদিন এই অভিযান চলবে।'
'অট্টালিকা হবে ভালো কথা, কিন্তু আমাদের সিটি করপোরেশনের ফুটপাতের মধ্যে কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে, আইনকে কোনো ধরনের সম্মান না জানিয়ে তারা নির্মাণসামগ্রী রেখে দিচ্ছে। এজন্য আমাদের ফুটপাত ভেঙ্গে যাচ্ছে,' বলেন মেয়র।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা সবাই বলেছি, তারপরেও তারা আইনকে তোয়াক্কা করছে না। তাই আমি আমার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছি, আজকে যেখানে যে অবস্থায় ফুটপাত ও সড়কে নির্মাণসামগ্রী পাওয়া যাবে, আইন অনুযায়ী এগুলো নিলাম দিয়ে দেওয়া হবে। এই প্রেক্ষিতে নিলাম শুরু হয়েছে।'
ব্যবসায়ী ও ভবন মালিকদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, 'আপনারা ব্যবসা করবেন, ব্যবসা করুন। কিন্তু কেন ফুটপাত ও রাস্তার মধ্যে নির্মাণসামগ্রী রাখবেন? এগুলো রাখার ফলে ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। আমি হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এই অভিযান প্রতি সপ্তাহে একদিন পরিচালিত হবে।'
অবৈধ বিলবোর্ড প্রসঙ্গে আতিকুল ইসলাম বলেন, 'ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্রভাবে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ডে ভরে গেছে। সাইনবোর্ডের জন্য কেউ কোনো পারমিশন নিচ্ছেন না। আমি বিনয়ের সাথে আপনাদেরকে অনুরোধ করছি, আপনারা নির্ধারিত ট্যাক্স সিটি করপোরেশনে দিয়ে তারপরে সাইনবোর্ড লাগাতে পারেন। তা না হলে আগামী ১৪ তারিখ হতে যত ধরনের সাইনবোর্ড আছে, সে সাইনবোর্ডও উচ্ছেদ শুরু হবে।'
'অতিরিক্ত সাইনবোর্ড লাগিয়ে অনেকে ঢাকা শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছেন। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকুন। আমাদের অভিযান চলবেই চলবে,' উল্লেখ করেন মেয়র।
উল্লেখ্য, সড়ক ও ফুটপাত রাখা অবৈধ নির্মণসামগ্রী ও অন্যান্য সামগ্রী উচ্ছেদে সোমবার ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলে মোট ৩২টি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এসব নিলামের মাধ্যমে ১৩ লক্ষ ৮ হাজার ৫৯০ টাকা এবং জরিমানা বাবদ ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়। এছাড়া ১ হাজার ২০০টি অবৈধ স্থাপনা, টং দোকান, শেড ইত্যাদি উচ্ছেদ করা হয়।
পরিদর্শনকালে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।