হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে আগুন দেওয়ায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে: স্পিকার
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে যে দুর্বৃত্তরা হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে সরকারিভাবে সহযোগিতা আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান।
আজ মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের করিমপুর ও মাঝিপাড়া গ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
এদিকে গত রোববার (১৭ অক্টোবর) রাতে মাঝিপাড়া-বটতলা ও করিমপুর গ্রামে দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি নির্মাণে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন দেওয়া হয়।
রংপুর জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ৬৫ পরিবারকে ১০০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়। তাৎক্ষণিক এই সরকারি সহযোগিতা পাওয়ায় খুশি ক্ষতিগ্রস্তরা।
পরিদর্শনে এসে জাতীয় সংসদের স্পিকার বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সরকারের আরো উদ্বেগ আছে। হামলার শিকার প্রতিটি পরিবারকে নতুন করে ঘর তুলে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশে ৩২ হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির রক্ষা করা গেছে, কিন্তু ৫০টি রক্ষা করা গেল না, এজন্য প্রশাসন দায়ী।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামাতের উপর ভর করে এদেশে সন্ত্রাসীরা জঙ্গিবাদ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করছে। আর এসকল ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে তিন মাসের মধ্যে দ্রুত বিচার আইনের আওতায় বিচারের দাবি জানান তিনি।
তিনি মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের করিমপুর গ্রাম পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের কাছে একথা বলেন। এসময় জাসদের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আজ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে এসে তথ্যমন্ত্রী ড হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি- জামাতের সন্ত্রাসীরা এর সাথে জড়িত। তারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে। কিন্তু, সরকার তা হতে দেবে না। সবাইকে যত দ্রুত সম্ভব আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে ঘটনার দিন ১৩৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও ১৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সময় প্রায় কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। লুটপাট করা হয়েছে গবাদিপশু ও গহনা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি-আসবাবপত্র।
করিমপুর গ্রামের রুপিন চন্দ্র দাস জানান, ঘটনার দিন তার গলা টিপে ধরে মারপিট করা হয়। তার বাসাতেও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা, জমানো ৭০ হাজার টাকা, গবাদিপশু ও গহনা লুট করে নিয়ে গেছে।
একই গ্রামের সুমন চন্দ্র রায় জানান, ঘরে থাকা চাল, ডাল, টাকা ও গরু সব লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা তাকেও মারধর করে।
তবে আজ সকাল থেকেই রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার করিমপুর গ্রামে বিভিন্ন সংগঠন রাজনৈতিক ও প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
ঘটনাস্থলে এসে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা দাবি করেন, এ ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে দ্রুত বিচার আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
তবে হামলার ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রাম দুটিতে পুলিশ বিজিবিসহ সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চলছে র্যাবের টহল।