১১ দফা দাবিতে ফের অনশনে পাটকল শ্রমিকরা
মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১দফা দাবি আদায়ে আবারো আমরণ অনশন শুরু করেছে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের শ্রমিকরা।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় প্লাটিনাম জুট মিলের ফটকে বৈঠক শেষে এ কর্মসূচির ঘোষণা করে সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদ। এরপর রাষ্টায়ত্ত্ব বাকি আট পাটকলেই এ কর্মসূচি শুরু হয়।
সন্ধ্যা সাতটায় শেষ খবর অনুযায়ী, অনশন কর্মসূচি চলছে।
মজুরি কমিশনসহ ১১দফা দাবি আদায়ে গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর ২টা থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা। কর্মসূচি পালনের তিন দিনের মাথায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ১৩ ডিসেম্বর এই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকায় দুই দফা মিটিং অনুষ্ঠিত হলেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় স্থগিত থাকা আমরণ অনশন আবারও শুরু করে শ্রমিকরা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে পাটকল শ্রমিক-নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় দফায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রীসহ পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সর্বশেষ আলোচনাও ব্যর্থ হওয়ায় শ্রমিক নেতারা ক্ষুব্ধ হন।
শ্রমিক নেতারা জানান, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের ব্যাপারে শ্রম প্রতিমন্ত্রী আরও এক মাস সময় চেয়েছেন। কিন্তু এক মাস পর মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন হবে কী-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে শ্রমিকদের।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের সাবেক সিবিএ সভাপতি মুরাদ হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘‘আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। এক মাসের সময় চাওয়া হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের পক্ষে ওই সময় দেওয়া সম্ভব নয়। শ্রমিকদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাই তারা ফের আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।’’
এর আগে পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক- কর্মচারীদের পিএফ ও গ্রাচ্যুইটির অর্থ পরিশোধ, চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহালসহ ১১ দফা দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর থেকে নিজ নিজ মিল গেইটের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন শ্রমিকরা। তীব্র শীতের মধ্যে টানা চারদিন ওই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
কর্মসূচি চলাকালে এক শ্রমিকের মৃত্যুসহ দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এ অবস্থায় গত ১৩ ডিসেম্বর খুলনার শ্রম দপ্তরে প্রথম দফা বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নেন। ওইদিন ঢাকায় বিজেএমসি দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পুনরায় ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়। কিন্তু সর্বশেষ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফা বৈঠকও ব্যর্থ হয়।