‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে ডিসেম্বরে নামছে ১২০ বাস
১২০টি নতুন বাস নিয়ে 'ঢাকা নগর পরিবহন' নামে শুরু হচ্ছে বাস রুট রেশনালাইজেশনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। কেরাণীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রস্তাবিত এই রুটে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলক এই যাত্রা শুরু হবে।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৮তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, 'আমরা দায়িত্বভার গ্রহণের পর গত বছরের ৬ অক্টোবর আমাদের প্রথম সভা (কমিটির ১২তম সভা) করি। এই করোনা মহামারির মাঝেও আমরা পুরোদমে কাজ করে চলেছি। যার ফলশ্রুতিতে আজকে আনন্দের সাথে বলতে পারি যেটা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ছিল, যেটা অত্যন্ত জটিল, দুরূহ সমস্যা ছিল, তা আমরা সমাধানের কাছাকাছি নিয়ে এসেছি। আজকে আমরা একটি চূড়ান্ত তারিখ দিতে পারছি। ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর-এই পাইলটিং রুটে নতুন নিয়মে, নতুন পদ্ধতিতে বাস চলবে। এর ফলে নতুন বাসের মাধ্যমে জনগণকে মানসম্পন্ন সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।'
বাস মালিক সমিতি, শ্রমিক প্রতিনিধিসহ সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বর্তমান পর্যায়ে উন্নীত হওয়া সম্ভব হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, 'এই সভার নেপথ্যে, অন্তরালে দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও দীর্ঘ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছি। আমরা আশা করছি আগামী ১ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী তাজুল ইসলাম উপস্থিত থেকে ঘাটারচর টু কাচপুর রুটের উদ্বোধন করবেন।'
এ জন্য যাবতীয় কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে তাপস বলেন, 'বাকি যে সময় আছে, এর মধ্যে বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন করে ১ ডিসেম্বর আমরা এই কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করব ইনশাল্লাহ। এই রুটে কার্যক্রম শুরুর পর পর্যায়ক্রমে এই ক্লাস্টারের বাকি যে যাত্রাপথগুলো রয়েছে, আমরা সেগুলোর কার্যক্রম শুরু করব। সবুজ এই ক্লাস্টারের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আমরা বাকি ক্লাস্টারগুলো নিয়ে কার্যক্রম শুরু করব।'
পরীক্ষামূলক নতুন রুটে কোনো পুরোনো বাস থাকবে না জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, 'ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে পুরোনো বাস চলবে না। এখন এই রুটে যে বাসগুলো চলছে, সেগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারির পর কেনা বাস থাকবে। বাকি বাসগুলো উঠিয়ে নেয়া হবে। এর সঙ্গে নতুন বাস যোগ হবে। সবমিলিয়ে এই রুটে ১২০টি নতুন বাস চলাচল করবে। এই প্রস্তাবনায় পরিবহন মালিকসহ সকলেরই সম্মতি রয়েছে।'
এ রুটে চলাচলকারী পরিবহনের নাম 'ঢাকা নগর পরিবহন' নামে নামকরণ করা হবে বলে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস জানান।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, 'এই রুটে চলাচলকারী পরিবহনের চালক এবং হেলপারের একটি নির্দিষ্ট পোশাক থাকবে। আগামী ২০ তারিখে এ রুটে চলাচলকারী বাসের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হবে। আমরা মনে করি, পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে।'
তিনি বলেন, 'নতুন এই রুটে ৪০টির বেশি যাত্রী ছাউনি করা হবে। বাস বে হবে ১৬টি। জায়গা সংকটের কারণে বাস বে'র সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। এছাড়া এ রুটের বাসগুলোর রং কী হবে, তা আগামী ১৪ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। পরে ২০ অক্টোবর বাসের রং নির্ধারণ করা হবে।'
সভায় ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিনসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।