‘ফ্যাভিপিরাভির’ এর ট্রায়ালে ১০ দিনে ৯৬ শতাংশ করোনা রোগী সুস্থ: বিকন ফার্মা
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় 'ফ্যাভিপিরাভির' ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকর ফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস।
বুধবার ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে এক সেমিনারে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের এ ফলাফল ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ গোলমা মোঘনী মওলা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৫০ জন রোগীর ওপর ফ্যাভিপিরাভির ঔষধের ট্রায়াল করা হয়েছে। ওষুধ প্রয়োগের ৪ দিনের মাথায় ৪৮ শতাংশ এবং ১০ দিনের মাথায় ৯৬ শতাংশ করোনামুক্ত হয়েছেন।
তিনি বলেন, "পরীক্ষার সময় প্লাসেবা গ্রুপের (যাদের বিকল্প ওষুধ দেওয়া হয়, বাস্তবে তা ওষুধ নয়) ক্ষেত্রে এই হার ছিল চারদিনের মধ্যে শূন্য শতাংশ এবং ১০ দিনের মধ্যে ৫২ শতাংশ। বিকল্প ওষুধ গ্রহণকারীদের চেয়ে এই ওষুধে রোগীর ফুসফুসের কার্যক্ষমতা তিনগুণ উন্নতি হয়েছে। তবে জটিল রোগী বা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের এই ওষুধ দেওয়া হয়নি।"
সেমিনারে এই চিকিৎসক বলেন, "সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এ ওষুধ গ্রহণে রোগীর লিভার, কিডনি ও রক্তে শর্করার কোনও ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। ফ্যাভিপিরা ও বিকল্প ওষুধ গ্রহণকারী- এই দুই গ্রুপের রোগীদের উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না।"
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হলে বা আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ না থাকলে এই ঔষুধ সেবনে নিষেধ করে সৈয়দ গোলাম মোগনী মওলা বলেন, "এই ওষুধটি শুধু তারাই খাবেন, যারা আরটি পিসিআর পজিটিভ।"
সেমিনারে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, করোনার চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ঔষধ এখনো না থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ীই ফ্যাভিপিরাভির ঔষধ সেবন করতে হবে।
কোনোভাবেই যেনো ডাক্তাদের পরামর্শ ছাড়া এই ঔষধ কেউ সেবন না করেন সে বিষয়ে সতর্ক করেন তিনি।
তিনি বলেন, "এটা কোনো প্রতিরোধমূলক ঔষধ না। যতোদিন পর্যন্ত ভ্যাকসিন আসবে না ততোদিন পর্যন্ত প্রতিরোধমূলক কিছু নেই। ভ্যাকসিন আসতে অন্তত আরও দুই বছর সময় লাগবে। ততদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।"
ফ্যাভিপিরাভির জেনেরিকের এই ঔষধটি উৎপাদনের পর বিকন ফার্মা তার নাম দিয়েছে 'ফ্যাভিপিরা'। এই ঔষধ জাপানে অ্যাভিগান নামে পরিচিত।