ঈদের দিন ৪ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ জানিয়েছেন, সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে গতকাল ৪ লাখ পিস চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'এবার চামড়া নষ্ট হওয়ার খবর আমরা পাইনি। এক সপ্তাহ পর লবণ দেয়া চামড়া সংগ্রহ করবো আমরা।'
মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, 'আমাদের চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা এক কোটি। গতকাল বাজার ঘুরে দেখেছি, যে সংগ্রহ হয়েছে তাতে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। আমাদের জানামতে, কোথাও কোন চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে এমন সংবাদ পাইনি। এবার সবাই প্রস্তুত ছিল বিশেষ করে, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেছে।'
এখন পর্যন্ত ঢাকায় ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা করে চামড়া কেনা হয়েছে জানান মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ।
গত বছর এই সময় করোনা সংক্রমণ বাড়তি ছিল, এছাড়া দ্রুত লবণ না দেয়ার ফলে কিছু চামড়া নষ্ট হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এ বছর কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক কোটি, যা গত বছর ছিল ৮২ লাখের কাছাকাছি।
চট্টগ্রামে এবার কোরবানির ঈদে চার লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল জেলার কাঁচা চামড়া আড়তদারেরা। সে লক্ষ্যমাত্রা তাদের পূরণ হয়েছে বলে জানা গেছে। লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণও শেষ তাদের। ১৫ থেকে ২০ দিন পর এ চামড়া তারা ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করবে।
এদিকে লালবাগের পোস্তায় এ বছর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৫০ হাজার। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। তবে পোস্তার ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। কারণ ট্যানারি মালিকরা সরাসরি কাঁচা চামড়া কিনেছেন। আবার সাভারে চামড়া শিল্প নগরীর পাশে কিছু কাঁচা চামড়ার আড়ত গড়ে ওঠায় সেখানেও ট্রাক ভরে চামড়া গিয়েছে।
পোস্তায় বড় গরুর চামড়া ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় কেনা হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এ বছর কাঁচা চামড়ার দাম ভালো। আমরা গড়ে ৮০০ টাকায় এক পিস কাঁচা চামড়া কিনেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা এখানে যে চামড়া আনি তা লবণ দিয়ে সংরক্ষিত ছিল।'
রাজধানীর সিটি কলেজ মোড়ে গতকাল দুপুর ৩টায় কথা হয় রাজধানীর জামিয়া ইসলামিয়া উত্তর বেগুনবাড়ি মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, '২০১৪ সালে প্রতি পিস চামড়া বিক্রি করেছি ২২০০ টাকায় কিন্তু ৮ বছর পর এসে বিক্রি করছি ৮৩০ টাকা করে। বুঝতে পারি না সবকিছুর দাম বাড়লেও কাঁচা চামড়ার দাম কেন বাড়ে না!'
মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ১৫০ পিস চামড়া বিক্রি করেছেন প্রতি পিস ৮৩০ টাকা করে। তিনি বলেন, 'গতবছরের তুলনায় বেশি দাম পেয়েছি, গতবছর তো প্রতি পিস ৫০০ টাকার বেশি পাইনি।'
আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার মূল্যবৃদ্ধি এবং এ খাত থেকে রপ্তানি আয় বাড়তে থাকায় এবছর কোরবানীর গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুটে ৭ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এ বছর লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ঢাকায় ৪৭-৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০-৪৪ টাকা, খাসির চামড়া সারাদেশে ১৮-২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২-১৪ টাকা দরে নির্ধারণ করা হয়।
গতবছর কোরবানীর সময় ঢাকায় গরুর চামড়ার দর ৪০-৪৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৩-৩৭ টাকা, খাসি ১৫-১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।