সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কমলো
প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম ১৪ টাকা এবং পাম অয়েলের দাম ৬ টাকা কমিয়ে, নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়- যা সোমবার থেকে কার্যকর হবে।
আজ রোববার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে মিলারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৯৯ টাকা থেকে কমে ১৮৫ টাকা, ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ৯৮০ টাকা থেকে কমে ৯১০ টাকা এবং প্রতি লিটার বোতলজাত পাম অয়েলের দাম ৬ টাকা কমে ১৫২ টাকা হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও মিলারদের কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে, গত ২৬ জুন প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ৬ টাকা কমিয়ে ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইন্দোনেশিয়া পামঅয়েল রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ২,০০০ ডলারে পৌঁছে, যার প্রভাবে বাংলাদেশে প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বাড়িয়ে ২০৫ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
তবে গত মে মাস থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম ক্রমাগতভাবে কমছে। বর্তমানে প্রতিটন অপরিশোধিত সয়াবিন ১,৩০০ ডলার এবং প্রতিটন পামঅয়েল ১,০০০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক দরে নিম্নমুখী প্রবণতার কারণে দেশের মিলগুলো তাদের উৎপাদিত তেলের মজুদ দ্রুত বাজারে ছেড়ে দিয়ে ব্যবসায়িক ঝূঁকি কমাচ্ছে। ফলে দেশের বাজারেও খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্য প্রতিনিয়ত কমছে।
'কিন্তু বোতলজাত ভোজ্যতেলের মূল্যে এমআরপি নির্ধারিত থাকায়, মিলগুলো পরিবেশক ও খুচরা ব্যবসায়ীদের বেশি মুনাফা দিয়ে বোতলজাত তেল বাজারজাত করছে, যার সুফল ভোক্তারা পাচ্ছে না। তাই আন্তর্জাতিক বাজার দর বিবেচনা করে মিলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ভোজ্যতেলের নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে'- জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা।
তারা বলছেন, গত কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও অপরিশোধিত পামঅয়েলের মূল্য ৩০% থেকে ৩৫% হ্রাস পেলেও ডলারের দর প্রায় ১৫% বেড়েছে। এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়েছে ৬০-৭০%।
এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম যে হারে কমেছে, দেশের বাজারে সে হারে কমছে না। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েলের স্থানীয় মূল্য ১০% কমানোর সুপারিশ করেছিল, কিন্তু কমছে তার চেয়েও কম।
মিলগুলোও ভোজ্যতেলের দাম কমানোর বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করে। মেঘনা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড এডিবল অয়েল লিমিটেড রোববার প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৯৯ টাকা থেকে ১৪ টাকা কমিয়ে ১৮৫ টাকা এবং ১ লিটার পলিপ্যাকের দাম ১৯৮ টাকা থেকে কমিয়ে ১৮৩ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করে। আর ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ৯৮০ টাকা থেকে কমিয়ে ৯১০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করে কোম্পানিটি।