আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বসলেই সমস্যা মিটে যেত: সিইসি
রাজনৈতিক সংকট সমাধানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজনৈতিকভাবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে এক টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তাহলে সমস্যা মিটে যেত।
সোমবার (১৮ জুলাই) নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব বলেন।
সিইসি বলেন, 'আমি মনে করি সরকারি দল ও তারা (বিএনপি) যদি বসতেন, বসে পাঁচ-সাতটা মিটিং করতেন, তাহলে সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু আমরা দেখতে পারছি না যে আওয়ামী লীগের সম্মানিত নেতারা, বিএনপির সম্মানিত নেতারা একসঙ্গে বসছেন। টেবিলে বসে আলোচনা করলে অনেক ভালো হতো এবং একটা সুরাহা হতো।'
সিইসি আরও বলেন, 'আমাদের জন্য যে প্রস্তাব ছিল, আমাদের আইন-কানুন দেখে নিয়েছি। আমাদের দায়িত্ব পালন করব। ভোটকেন্দ্রে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টা, ভোটকেন্দ্র যেন কারও দখলে চলে না যায়- সেটা আমরাও চেষ্টা করব, আপনারাও চেষ্টা করবেন। নির্বাচন কমিশনের কাজ একটাই, ভোটারকে ভোটদানের সুযোগ করে দেওয়া। এই কাজটা ইসিকে নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি।'
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে একটা জিনিস দাঁড়িয়ে গেছে, যে করেই হোক জিততে হবে। কিন্তু হেরে যাওয়াও মানতে হবে।
সংলাপে নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দল নিয়ে জাতীয় পরিষদ গঠন করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দাবি জানানো সহ বিভিন্ন প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।
নির্বাচন নিয়ে সংকটে পড়ে গেছেন সিইসি
এর আগে একইদিন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে সিইসি নির্বাচন নিয়ে সংকটে আছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি নির্বাচনের নামে নাটক মঞ্চস্থ হোক সেটা চাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, 'নির্বাচন নিয়ে সংকটে পড়ে গেছি। একটা বড় দল বলছে নির্বাচনে অংশ নেবে না। আরেকটি দল বলছে নির্বাচন হবে। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত বা কাঙ্ক্ষিত যা-ই হোক, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে।'
সিইসি আরও বলেন, সরকার জনপ্রতিনিধিত্বমূলক হতে হবে। সেখানে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন যদি নির্বাচন না হয়, নির্বাচনের নামে নাটক মঞ্চস্থ হোক সেটা আমরা কখনো চাইবো না। আপনারাও চাইবেন না।
তিনি বলেন, যেভাবেই হোক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। সুন্দর সংসদ ও সরকার গঠিত হোক এটাই আমরা চাই। বিএনপি যেটা দাবি করছে- আলাপ আলোচনা ও সংগ্রামের মাধ্যমে বিএনপিকে তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কারণ এটির সঙ্গে সংবিধান জড়িত।
সিইসি আউয়াল যোগ করেন, আমাদের কোনো অনুরাগ-বিরাগ নেই। আমাদের একটাই কাজ। ভোটারকে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দিতে হবে। গ্রামে-গঞ্জে, শহরে ভোটারদের বাধা দেওয়া হলে, সেটি অবহিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমরা অবশ্যই সচেষ্ট হব।
নির্বাচন কমিশনের অনেক ক্ষমতা রয়েছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, অতীতে হয়তো কোনো কারণে সেই ক্ষমতা পুরোপুরি প্রয়োগ করতে পারেনি। কিন্তু আমরা সেটি প্রয়োগ করার চেষ্টা করব।
সংলাপে ভোটের সময় জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ, ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়গুলো ইসির অধীনে আনার প্রস্তাব ওঠে। বিষয়টি জটিল উল্লেখ করে সিইসি বলেন, এর সঙ্গে সাংবিধানিক বিষয় জড়িত রয়েছে। এটি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে সংলাপ করতে পারে।