সামিয়া রহমানের কাছে সাড়ে ১১ লাখ টাকা পাওনা দাবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, ‘প্রতিহিংসা’ বলছেন তিনি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানকে আগাম অবসরের অনুমতি দেওয়ার পর এখন পাওনা হিসেবে তার কাছে সাড়ে ১১ লাখ টাকা দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১০ আগস্ট) ঘটনাটিকে 'প্রতিহিংসা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া। এ সময় কিসের ভিত্তিতে ওই টাকা চাওয়া হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যাও দিতে পারেনি ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
গত ৪ আগস্ট সামিয়া রহমানকে গবেষণায় 'চৌর্যবৃত্তির' (প্লেজিয়ারিজম) অভিযোগে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে দুই বছর পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক রাখার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে 'আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত' হিসেবে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি গবেষণায় 'চৌর্যবৃত্তির' অভিযোগে শাস্তি হিসেবে সামিয়া রহমানের এ পদাবনমন ঘটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। ওই বছরের ৩১ আগস্ট এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন তিনি।
২০২১ সালের শেষদিকে চার মাসের অর্জিত ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যান সামিয়া রহমান। ছুটি শেষ হওয়ার আগে তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বিনা বেতনে আরও এক বছর ছুটির আবেদন করেন।
কিন্তু কর্তৃপক্ষ তার আবেদনের অনুমোদন দেয়নি। পরে ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগাম অবসরের আবেদন করেন তিনি। ২৬ এপ্রিল তার এ আবেদন মঞ্জুর করে সিন্ডিকেট।
তবে এক চিঠিতে কর্তৃপক্ষ জানায়, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
'আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদসহ জমা আছে ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ২১৬ টাকা৷ হিসাব পরিচালকের দপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আপনার দেনা ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা,' চিঠিতে জানানো হয়।
সামিয়া রহমান বলছেন, কিসের ভিত্তিতে পাওনা দাবি করা হলো, তা চিঠিতে উল্লেখ নেই৷ উচ্চ আদালতে রিটে হেরে গিয়ে এখন তাকে হয়রানি করার জন্যই এ চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন এ শিক্ষক৷ তিনি আরও জানিয়েছেন, এর বিরুদ্ধেও আদালতে যাবেন তিনি৷
এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সামিয়া রহমানকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে অবসর দিতে রাজি হয়েছে৷ কিন্তু উচ্চ আদালত তাকে তার আগের সহযোগী অধ্যাপক পদ ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত হিসাব পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দাবি করেছেন, এ ধরনের কোনো চিঠি তিনি দেখেননি৷
'না দেখে বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে পারব না৷ সাধারণত রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে এসব চিঠি পাঠানো হয়ে থাকে,' বলেন তিনি।