বিদ্যুৎ সংকট: ট্যানারি বর্জ্য উপচে সরাসরি পরিবেশে, ৬ মাস যাবত নষ্ট জেনারেটর
সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে চলছে ভরা মৌসুম, বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় চলতি মৌসুমে ট্যানারিগুলো তুলনামূলক বেশি চামড়া প্রক্রিয়াজাত করায় প্রতিবছরই এ সময়ে নির্ধারিত সক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এই শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারে (সিইটিপি)।
সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এর বিভিন্ন পয়েন্টে সড়কগুলোর মাঝে থাকা ইফ্লুয়েন্ট পাইপলাইনগুলোর সংযোগস্থল থেকে ট্যানারি কারখানার তরল বর্জ্য ওভার-ফ্লো হয়ে- তা শিল্প নগরীর সড়কগুলোতে উপচে পড়ছে; সেখান থেকে সড়কের পাশে থাকা সারফেস ড্রেনের মাধ্যমে তা সরাসরি চলে যাচ্ছে পাশ্ববর্তী ধলেশ্বরী নদীতে।
একাধিক ট্যানারি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, মূলত চলমান বিদ্যুৎ সংকটের কারণে গত কয়েকদিন যাবতই এভাবে সড়কে তরল বর্জ্য উপচে পড়ে তা সরাসরি পরিবেশে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে শিল্প নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা ইফ্লুয়েন্ট পাম্পিং স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, এই সমস্যা সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছেন তারা।
শিল্প নগরী সূত্রে জানা গেছে, টানারি কারখানাগুলো থেকে তরল বর্জ্য পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি চলে যায় শিল্প নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা ইফ্লুয়েন্ট পাম্পিং স্টেশনে (ইপিএস)। সেখান থেকে স্টেশনগুলো পাম্প করে সেই বর্জ্য পাঠিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারে (সিইটিপি)। এর মধ্যে কোনো কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলে তরল বর্জ্য জমা হয়ে সিইটিপিতে যেতে না পেরে, সড়কের নিচে বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা সংযোগস্থল দিয়ে সড়কে উপচে পড়ে সেখান থেকে উন্মুক্ত ড্রেনে চলে যায়, যা সর্বশেষ পার্শ্ববর্তী নদীতে গিয়ে পড়ে।
সূত্রটি জানায়, বিদ্যুতের বিকল্প হিসাবে শিল্প নগরীর মোট ৩টি ইফ্লুয়েন্ট পাম্পিং স্টেশনে পৃথক ৩টি জেনারেটর থাকলেও গত প্রায় ৬ মাস যাবত এর সবগুলোই বিকল হয়ে আছে, ফলশ্রুতিতে বিদ্যুৎ চলে গেলে পাম্প বন্ধ হয়ে বর্জ্যগুলো ওভার-ফ্লো হয়ে সরাসরি নদীতে গিয়ে মিশছে।
জানতে চাইলে ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়েস্টেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সতেন্দ্র নাথ পাল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমাদের সিইটিপিতে বিদ্যুৎ সংকট নেই, তবে ইপিএসগুলো মাঝে মাঝে লোডশেডিংয়ের আওতায় পড়ে যায়। তখন এই সমস্যার সৃষ্টি হয়।"
''আমরা ইতিমধ্যে জেনারেটর মেরামত প্রসঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, জেনারেটরগুলো সচল হলে আর এই সমস্যা থাকবে না", যোগ করেন তিনি।
তবে কবে নাগাদ জেনারেটর মেরামত করা হবে সেবিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা। এছাড়াও এভাবে ওভার-ফ্লো হয়ে প্রতিদিন ট্যানারির কী পরিমাণ তরল বর্জ্য সার্ফেস ড্রেন হয়ে সরাসরি নদীতে গিয়ে মিশছে সেই বিষয়েও কোন ধারণা দিতে পারেননি তিনি।