গার্ডার সরানোর বিষয়ে বিআরটিকে জানানো হয়নি, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ঠিকাদার: বিআরটি এমডি
উত্তরায় গার্ডার চাপায় পাঁচজনের মৃত্যুর একদিন পর মঙ্গলবার ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিবিআরটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দায়ী।
সোমবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর উত্তরায় জসিমউদ্দিন সড়কে বিআরটি-৩ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ১৫০ টন ওজনের গার্ডার একটি গাড়ির ওপর পড়লে ৭ যাত্রীর মধ্যে ৫ জনই নিহত হন।
বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, ১৫ আগস্ট ছুটির দিন হওয়ায় নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার কথা ছিল। তাই গার্ডার সরানোর বিষয়ে বিআরটি কিছুই জানে না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এ ঘটনার জন্য চীনা ঠিকাদার কোম্পানিকে দায়ী করা হতে পারে।
এদিকে আজ সকালে বিআরটি-৩ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ স্থগিত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
সোমবার মধ্যরাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্না আক্তারের ভাই আফরান মন্ডল বাবু চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে এ মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে বলে জানান উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন।
তিনি বলেন, "মামলায় ক্রেন অপারেটরকেও আসামি করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছি। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।"
সোমবার (১৫ আগস্ট) উত্তরার জসীমউদ্দিন এলাকায় চলন্ত প্রাইভেট কারের ওপর গার্ডার পড়ে দুই শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়।
ঘটনার পরপরই হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১) নামে দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়; এরা নবদম্পতি। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন হৃদয়ের বাবা মো. রুবেল মিয়া (৫০), নববধূ রিয়ার মা ফাহিমা (৪৫), ফাহিমার বোন ঝর্ণা (২৮) এবং তার দুই শিশুসন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)।
গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশেষায়িত বাসের জন্য পৃথক লেন তৈরির প্রকল্পটি তিনটি সরকারি সংস্থা- সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি), বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ দ্বারা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনটি সংস্থার কাজের সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিন প্রকল্প পরিচালক।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১২ সালের শেষের দিকে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ ২০১৬ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১০ বছরে কাজের এক তৃতীয়াংশও শেষ হয়নি। ইতোমধ্যে, প্রকল্প সমাপ্তির মেয়াদ এবং ব্যয় উভয়ই দ্বিগুণ হয়েছে।
ধীরগতির কারণে, প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ২০৩৯.৮৪৮৯ কোটি টাকা থেকে ১০৯ শতাংশ বেড়ে ৪২৬৮.৩২ কোটি টাকা হয়েছে। এডিবিসহ তিনটি দাতা সংস্থা প্রকল্পটির জন্য ২ হাজার ৮৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে।