হাতিরঝিল থানা হেফাজতে যুবকের মৃত্যু
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত সুমন শেখকে (২৫) শনিবার (২০ আগস্ট) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। তবে পুলিশের দাবি, নিহত সুমন আত্মহত্যা করেছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি, তেজগাঁও বিভাগ) উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক জানান, শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে চুরির মামলায় সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং শুক্রবার রাতেই ঢাকার রামপুরায় তার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশে ইউনিলিভারের পিউরইট নামের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন সুমন শেখ। ওই অফিস থেকে ৫৩ লাখ টাকা চুরি হলে ১৫ আগস্ট হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা হয়।
ডিসি জানান, তিন সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজের ভিত্তিতে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, "বাড়িতে অভিযানের পর শনিবার সকালে সুমনকে আদালতে হাজির করার কথা থাকায় তাকে থানা হাজতে রাখা হয়।"
"ভোররাত ৩ টায় সুমন তার পরনে থাকা ট্রাউজার দিয়ে গলায় ফাঁস দেন, যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এই ফুটেজ নিহতের স্ত্রীসহ স্বজনদেরও দেখানো হয়েছে", যোগ করেন ডিসি।
এ ঘটনায় রাতে থানায় থাকা ডিউটি অফিসার হেমায়েত হোসেন ও হাজতের প্রহরী মো. জাকারিয়াকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, সুমনের জন্য বিচারের দাবিতে শনিবার হাতিরঝিল থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ স্বজনরা। এতে বিকাল ৫টা থেকে হাতিরঝিল থানার সামনের সড়কে যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
সুমনের স্ত্রী জান্নাত আরা সাংবাদিকদের বলেন, "আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। আমরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি চাই।"
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
সুমনের পৈতৃক বাড়ি নবাবগঞ্জের দক্ষিণকান্দিতে। ছয় বছরের একটি সন্তান রয়েছে তার।