মোমেনের বক্তব্য গণমাধ্যমে সঠিকভাবে প্রকাশিত হয়নি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্য কিছু গণমাধ্যমে সঠিকভাবে প্রকাশিত হয়নি বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ সোমবার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেছেন, "আমাকে যে অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তার ধারে কাছেও আমি বলিনি। আমি ইলেকশন নিয়ে কোনো কথা বলি নাই। ভারতে (গিয়ে) ইলেকশন নিয়ে কোনও সাহায্যের জন্য বলিনি।"
সাংবাদিকরা তখন জানতে চান, আপনি তাহলে কী বলেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "আমি স্থিতিশীলতার কথা বলেছি। আমি গ্লোবাল কন্টেক্সটে সব জায়গায় যে অস্থিতিশীলতা হচ্ছে- সেকথা বলেছি।"
সাংবাদিকরা আরও জানতে চান, তাহলে আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, এনিয়ে আপনি কী বলবেন? জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "এগুলো তো একেবারে ডাহা মিথ্যা।"
মন্ত্রণালয় থেকে এবিষয়ে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু মিডিয়া এসব দিক তুলে না ধরে তার বক্তব্যকে বিকৃতভাবে প্রচার করছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তিনি ভারতে গিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন।
এবিষয়ে সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে— ভারতে গিয়ে এমন কোনও কথা আমি বলিনি।"
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফরে নির্বাচন নিয়ে কোনো কথাই হয়নি। তিনি গৌহাটিতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ হওয়ায় আসামে স্থিতিশীলতা এসেছে এবং অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। সে প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ভারত সরকারকে বলেছেন যে, উভয় দেশের মঙ্গলের জন্য, উন্নয়নের জন্য স্থিতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। কোনো ধরণের সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে অতিরঞ্জিতভাবে প্রচার করে যাতে উভয় দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়- সে বিষয়ে বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের সহায়তা চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, 'শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি'।
তার এ বক্তব্য নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়, বিএনপির নেতারা বলছেন সরকার টিকিয়ে রাখতে বিদেশি শক্তির দ্বারস্থ হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যেও মোমেনের এই মন্তব্যের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী তার পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন।