১৭০ টাকা মজুরিতে কাজে ফিরছেন চা শ্রমিকরা
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কর্মবিরতির পর কাজে ফিরেছেন বেশকিছু বাগানের চা শ্রমিকেরা। বাকি বাগানগুলোর শ্রমিকরা সোমবার থেকে কাজে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
মজুরি বাড়ানোয় বিভিন্ন বাগানে আজ আনন্দ মিছিল করেছেন কিছু শ্রমিক।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০ টাকা করার দাবিতে টানা ১৫ দিন ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে নতুন মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত মজুরি মেনে নিয়ে কাজে ফিরতে শুরু করেছেন শ্রমিকরা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা সন্তুষ্টির কথা জানালেও সাধারণ চা শ্রমিকরা এতে খুশি নন।
তবে রোববার সিলেটের ২৩টি চা বাগানের মধ্যে কেবল ৯টি বাগান চালু থাকে। বাকিগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটি। এই ৯টি বাগানে রোববারই কাজ শুরু হয়েছে।
বাকি বাগানগুলোর শ্রমিকরা সোমবার থেকে কাজে যোগ দেবেন। হবিগঞ্জের বাগানগুলোর শ্রমিকরাও সোমবার থেকে কাজে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
সকালে সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, পাতা তোলার কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকেরা। চালু হয়েছে বাগানের কারখানাও। মজুরি মাত্র ৫০ টাকা বাড়ায় অসন্তুষ্টির কথাও জানিয়েছেন সাধারণ শ্রমিকরা। তবু তারা কাজে যোগ দিয়েছেন।
চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, 'সকাল থেকে বেশ কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে কিছু বাগানে আজ সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আজ কাজে যাচ্ছেন না তারা, সে সকল বাগানের শ্রমিকরা আগামীকাল সোমবার থেকে কাজে যোগ দেবেন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ফিনলে চা বাগানের শ্রমিক রতন মুণ্ডা বলেন, 'অনেক দিন পর কাজে ফিরতে পেরে বেশ ভালো লাগছে, তবে মজুরি আরেকটু বাড়লে ভালো হতো। ১৭০ টাকা দিয়ে এখন চলা কঠিন।
প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭টি চা-বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। বর্তমানে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন শ্রমিকরা। গত ৯ আগস্ট এ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে প্রথম কয়েকদিন কেবল ৪ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
কিন্তু মালিক পক্ষ এ সময়ের মধ্যে বৈঠক বা সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসক দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সমাধান হচ্ছিল না। সবশেষ ২৭ আগস্ট রাতে প্রধানমন্ত্রী বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে নতুন মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেন। এরপরে রোববার থেকে কাজে ফিরতে শুরু করেন চা-শ্রমিকরা।