বান্দরবানের আকাশসীমায় মিয়ানমারের ৪টি যুদ্ধবিমান
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় এবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৪টি যুদ্ধ বিমান বাংলাদেশের সীমান্তের ভেতর ঢুকে পড়েছে, যুদ্ধবিমান থেকে ফায়ার করা দুইটি গোলা বাংলাদেশের মাটিতে এসে পড়ে।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রেজু আমতলীর বিজিবির বিওপির (সীমান্ত চৌকি) আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০ ও ৪১ নম্বর মাঝামাঝি এলাকায় ঢুকে পড়ে এসব যুদ্ধ বিমান।
''এ সময় যুদ্ধ বিমান থেকে আনুমানিক আট-দশটি গোলা এবং হেলিকপ্টার থেকে ৩০-৩৫টি ফায়ার করতে দেখা গেছে। যুদ্ধ বিমান থেকে ফায়ার করা ২টি গোলা ৪০ নম্বর সীমান্ত পিলার ১২০ মিটার বরাবর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে।''
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তুমব্রু সীমান্ত পিলার ৩৪ ও ৩৫ নম্বর এলাকায় মিয়ারমানের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিপি) রাইট ক্যাম্প থেকে ভারী অস্ত্রের ফায়ারিং এখনও চলছে।
এছাড়া মুরিঙ্গাঝিরি ও রাইট ক্যাম্প থেকে থেমে থেমে মর্টার ফায়ারও অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. মেহেদী হোসাইন কবিরকে কয়েকবার কল করা হলে তিনি ধরেননি।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া দুটি ভারী মর্টার শেল বান্দরবানের তুমব্রুতে এসে পড়ে। মর্টার শেলগুলো বিস্ফোরিত না হলেও স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিজিবি সদস্যরা পরে মর্টার শেল দুটি নিষ্ক্রিয় করেন।
ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার স্থানীয়রা জানায়, দুপুর আড়াইটার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে একটি স্থানীয় মসজিদের পাশে মর্টার শেল দুটি এসে পড়ে।
তারা জানান, রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ চলছে।
সকাল থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছিল। এরপর দুপুরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান সীমান্তে চক্কর দিতে দেখা গেছে। পরে বাংলাদেশের সীমান্তে মর্টার শেল দুটি পড়ে।
তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছিলেন, ঘটনার সময় তিনি শহরের বাইরে ছিলেন। স্থানীয়রা তাকে জানায়, দুপুর আড়াইটার দিকে মিয়ানমার থেকে দুটি মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়।
এ ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, "বিষয়টিকে আক্রমণ হিসেবে দেখছে না, বরং দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। এ ধরনের ঘটনায় আগেও মিয়ানমারকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, এবারও কঠোর বার্তা দেওয়া হবে।"