সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত
বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন সিলেটের পরিবহন শ্রমিকেরা। আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মবিরতি স্থগিত রাখবেন তারা।
রাত ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন 'সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন।
তিনি বলেন, প্রশাসন আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। একইসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে কর্মবিরতি স্থগিতের অনুরোধ করেছেন। তাদের আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা কর্মবিরতি স্থগিত করছি।
এর আগে মঙ্গলবার রাত ৮টায় সিলেট সার্কিট হাউসে বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে এ বৈঠক শুরু হয়।
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আমাদের সব দাবি মেনে নেবেন এবং আগামীকাল থেকে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করবেন। তাদের আশ্বাসে প্রেক্ষিতে এবং এসএসসি পরীক্ষা ও দুর্গা পূজার কথা বিবেচনা করে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মবিরতি স্থগিত রাখছি। আশা করছি এই সময়ের মধ্যে দাবিগুলো পূরণ করা হবে।
বৈঠকে কমিশনারের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন ও 'সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ'র নেতৃবৃন্দ।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকে পাঁচ দফা দাবিতে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন পরিবহন শ্রমিকেরা। বুধবার থেকে বিভাগের চার জেলায় এ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।
পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে দিনভর কার্যত অচল ছিলে সিলেট। সকাল থেকে সিলেটের বিভিন্ন মোড়ে ও নগরের প্রবেশ পথে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেন পরিবহন শ্রমিকরা। ব্যক্তিগত গাড়ি, পণ্যবাহী গাড়ি এমনকি বিআরটিসি বাস চলাচলেও বাধা দেন তারা। শ্রমিকদের পিকেটিংয়ের কারণে রাত পর্যন্ত কোনো গাড়িই সড়কে চলাচল করতে পারেনি।
এছাড়া বন্ধ ছিলে সিএনজিচালিত অটোরিকশাও। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। দুরপাল্লার যাত্রীদের পাশাপাশি নগরের ভেতরে চলাচলকারী যাত্রীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পরিহন শ্রমিকদের দাবি পাঁচটি দাবি হলো:
- ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, রেকারিং বাণিজ্য, ও মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা আদায় বন্ধ। মহানগর পুলিশ কমিশনার, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার ও অতিরিক্ত উপকমিশনারকে প্রত্যাহার
- গাড়ি ফিটনেস মামলা সঠিকভাবে করা, সিলেট শ্রম আদালতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে হয়রানি বন্ধ, এবং আদালত থেকে শ্রমিক প্রতিনিধি নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার
- হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বন্ধ পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া
- সিলেটের সব ভাঙা সড়ক সংস্কার
- সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ করা। অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ডাম্পিং কার, এবং অন্য জেলা থেকে আগত গাড়ি চলাচল বন্ধ করা