৮১৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৩ জন আটক
ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান ও সাবেক ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৮১৬ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে কোম্পানির লিগ্যাল অফিসারের দায়ের করা মামলায় প্রতিষ্ঠানের তিন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক এম এ খালেক ও খালেকের ছেলে রুবায়ত খালেদকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ওসি মাহফুজুল হক ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুব আহমেদের আদালতে আসামিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিন মঞ্জুর করলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
বিমা কোম্পানিটির আইন কর্মকর্তা, মামলার বাদী জসিম উদ্দিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, উল্লেখিত ১৪ জন আসামি বিভিন্ন সময় জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড থেকে প্রায় ৮১৬ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।
তিনি আরো বলেন, বিপুল পরিমাণ টাকা পরস্পরের যোগসাজশে আত্মসাৎ করতে তারা কোম্পানির বিভিন্ন সময়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে বিভিন্ন কাগজপত্র জাল করেছেন।
২০১১ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গত ১০ বছরে এই বিপুল পরিমাণ টাকা সরানো হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন: সাবেক পরিচালক শাহরিয়ার খালেদ, তানভীরুল হক, নূর মোহাম্মদ ডিকন ও একরামুল আমিন, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী হোসেন ও আলমগীর কবির, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হেমায়েত উল্লাহ, সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান খান, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ আবদুর রাজ্জাক, সাবেক সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা সহ-সভাপতি কামাল হোসেন হাওলাদার, যুগ্ম নির্বাহী সহ-সভাপতি ও প্রথম সহকারী সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মকবুল এলাহী।
বিমা কোম্পানিটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক একরামুল আমিন ও সাবেক সিইও হেমায়েত হোসেনের বক্তব্য জানতে চেয়ে বারবার চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় আসামি এমএ খালেক ও নজরুল ইসলাম বিমা কোম্পানিটির বোর্ড থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন সময়ে এসব সম্পদ ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন যা প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্টে উঠে এসেছে। এছাড়া, মামলার তদন্তে আরো বিস্তারিত বেরিয়ে আসবে বলে বাদী উল্লেখ করেছেন।
এসব অর্থের একটা বড় অংশ দেশের বাইরে পাচার করে আসামিরা বাড়ি-গাড়ি ও ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার বাদী জসীম উদ্দিন বলেন, দেশের স্বনামধন্য দুটি অডিট প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসী চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানি ও হাওলাদার ইউনূস অ্যান্ড কোম্পানি দিয়ে অডিট করানো হলে আসামিদের আর্থিক জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
এদিকে, ফারইস্ট ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে সাবেক পরিচালক এমএ খালেদ ও তার ছেলে রুবায়াত খালেদকে দু'দিন করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহম্মেদ এ আদেশ দেন।