ভারত সফর থেকে বাণিজ্য, কৃষি, কানেক্টিভিটি ও জ্বালানি খাতে সহায়তা এনেছি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সাম্প্রতিক ভারত সফর ফলপ্রসূ হয়েছে, কারণ প্রতিবেশী দেশটি বাংলাদেশের বাণিজ্য, কৃষি, কানেক্টিভিটি ও জ্বালানি খাতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমরা আমাদের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশীর কাছ থেকে ব্যবসা, বাণিজ্য, কৃষি, যোগাযোগ, সব খাতে সহযোগিতা পেয়েছি। ভারতের নির্মাণ করা পাইপলাইন দিয়ে তেল পাচ্ছি আমরা।'
জ্বালানি খাতে প্রতিবেশী দেশের সাহায্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সুবিধার্থে আসামের নুমালিগড় থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর তেল ডিপোতে জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য ভারত একটি পাইপলাইন স্থাপন করবে।
'প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার আরও উন্নয়ন হবে,' তিনি যোগ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফর থেকে বাংলাদেশ কোনো সুফল পাচ্ছে না, বিএনপির এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'আমার মনে হয় না আমি খালি হাতে ফিরেছি।'
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, তার সাম্প্রতিক ভারত সফর দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
'ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ভাষা ও সংস্কৃতির সাযুজ্যের কারণে আমাদের সম্পর্ক প্রগাঢ় হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালে সহায়তা ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সহযোগিতা এ বন্ধুত্বকে বিশেষত্ব প্রদান করেছে।'
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সফরকালে তার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় ভারতের অবদান সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, বাণিজ্য ও যোগাযোগসহ অনেক খাতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা পেয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ভারত সফরে যান তিনি। করোনা মহামারির আগে তিনি সর্বশেষ ২০১৯ সালে ভারত সফর করেছিলেন।
৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগায় দোয়ার মাধ্যমে তিনি ভারত সফর শুরু করেন।
সফরের প্রথম দিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
৬ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে শেখ হাসিনা হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও একান্ত বৈঠক করেন।
নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান এবং তাকে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। যার মধ্যে কুশিয়ারা নদী থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের সমঝোতা স্মারকও আছে।
এছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রী খুলনার রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন।