পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪১
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে নারী ২২ জন, পুরুষ ৮ জন ও শিশু ১১ জন।
আজ সোমবার সকালে আরও চারটি লাশ উদ্ধার করা হয় পঞ্চগড় থেকে। এ ঘটনায় এখনো অন্তত ৩৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বোদা উপজেলায় ৮জন, দেবীগঞ্জ উপজেলায় ২ ও পাশের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা থেকে ৬ জন এবং বীরগঞ্জ উপজেলা থেকে ১জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বার্তাসংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে বলা হয়, পঞ্চাগড় ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক এবং সিভিল ডিফেন্স শেখ মোহাম্মদ মহাবুবুল ইসলাম জানিয়েছেন, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের কর্মীরা সকাল ৬টায় নদী থেকে দুই নারী এবং এক শিশুসহ চারজনের লাশ উদ্ধার করে।
পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে পলি রানী (১৪), লক্ষ্মী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দীপঙ্কর (৫), প্রিয়ান্তা রানী (৫), খুকি রানী (৩৫), প্রলিমা রানী (৫৫), তারা রানী (২৪), শোনেকা রানী (৬০), ফাল্গুনি রানী (৫৫), প্রমিলা রানী (৭০), ধনবালা (৪৭), সুমিত্রা রানী (৫৭), সফলতা রানী (৪০), শিমলা রানী (৩৫), নৌকার মাঝি হাসান আলী (৫২), উশোষী রানী (২), তনুশ্রি রানী (২), শ্রেয়শী রানী (২), বিমল চন্দ্র (৪৫), শ্যামলি রানী (৩৫), জোতিষ চন্দ্র (৫৫) রূপালি রানী (৩৫)- এ কয়জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে।
এছাড়া, নিখোঁজ থাকা ৭ জনের মরদেহ দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ সোমাবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার আত্রাই নদী থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার হয়।
মরদেহগুলো ছিল তিন শিশু ও চারজন নারীর।
বীরগঞ্জ থানার ওসি সুব্রত সরকার জানান, তারা বীরগঞ্জ আত্রাই নদীর কাশিমনগর বাদলা ঘাট থেকে একটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছেন।
তিনি জানান, শিশুটির নাম সুব্রত রায়, বয়স আড়াই বছর। শিশুটি পঞ্চগড় উপজেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া গ্রামের প্রফুল্ল রায়ের ছেলে।
খানসামা থানার ওসি চিত্ত রঞ্জন জানান, তার এলাকায় খানসামায় আত্রাই নদীর জিয়া সেতুর কাছ থেকে চারটি নারী ও দুটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছেন। তাদের নাম পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গতকাল রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বধেশ্বর মন্দিরে (নদীর অপরপাড়ে) মহালয়া উপলক্ষে এক বিশাল ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। এই ধর্মসভায় যোগ দিতে জেলার বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন শ্যালো মেশিন চালিত নৌকা করে যাচ্ছিল।
অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে মাঝনদীতে গিয়ে ট্রলারটি উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। সাঁতার জানা যাত্রীরা তীরে উঠে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে অনেককে উদ্ধার করে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়।
গতকাল নদী থেকে ২৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।
এছাড়া এখনও ছয় জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে।