গাইবান্ধা নির্বাচন স্থগিত করার প্রশংসা করেছেন সাবেক সিইসিরা
গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এই সিদ্ধান্তের প্রসংশা করেছেন সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারগণ (ইসি)। সেই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা ইসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে স্থানান্তরের বিরোধিতা করেন তারা।
বুধবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে সাবেকদের সাথে বৈঠক করে বর্তমান কমিশন। সভা শেষে সাবেক সিইসি-ইসি সাংবাদিকদের এসব জানান।
সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ বলেন, "স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধিকার আছে। তাদের চোখের সামনে ধরা পড়ছে। ভোট দিতে পারছে না, কারচুপি হচ্ছে। তাই তারা নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বলেছি দরকার হলে বারবার নির্বাচন বন্ধ করবেন।"
এনআইডি নিয়ে তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশন এর প্যারেন্ট। এটা তাদের কাছে না থাকলে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে যদি দেখেন এনআইডিতে একটা, ভোটার লিস্টে অন্যটা তথন গন্ডগোল লাগবে।"
সাবেক সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, "নির্বাচন কমিশন সাংববিধানিক বডি। সংবিধান ও আইন মোতাবেক তারা কাজ করে যাবে।"
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ইভিএম নিয়ে প্রচার প্রচারণা করতে হবে। এর সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। এটা নিয়ে ইতিবাচক প্রচারণার দরকার আছে।"
এনআইডি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ভোটার তালিকা থেকেই এনআইডি এসেছে। এনআইডি ইসির কাছে না থাকলে লোকজন ভোটার হতে চাইবে না। এটা এখানে থাকা উচিত। এটাতে কোন দুর্বলতা থাকলে সেটাকে সঠিক করতে হবে।"
গাইবান্ধা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ আরেক সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, "কমিশন বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এই ক্ষমতা আছে। তারা তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "এনআইডি নির্বাচন কমিশনের তৈরি একটি জিনিস। এনআইডির সাথে জাতীয় নির্বাচন, ভোটার তালিকার পুরোপুরি সম্পর্ক রয়েছে। এটাকে মাঝখান থেকে নিয়ে গেলে নির্বাচন কমিশনের কাজ করতে অসুবিধা হবে।"
ইভিএম নিয়ে বলেন, "যেসব জায়গায় ইভিএম হযেছে সেখানে ৬০-৮০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পড়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।"
"যতদূর পারা যায় আগামী জাতীয় সংসদে ইভিএম ব্যবহার করা উচিত", তিনি বলেন, "মাঠ প্রশাসনে ভালো একটি সমন্বয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের সাথে ঘন ঘন বৈঠক করতে হবে। তাদেরকে নির্বাচনী কাজে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।"
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, "গাইবান্ধায় আমরা যে অ্যাকশনটা নিয়েছি- ওনারা বলেছেন এটা সঠিক হয়েছে। আইনগতভাবে ও সাংবিধানেকভাবে ঠিক হয়েছে। ওনারা গুরুজন হিসেবে আমাদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন-সততার সাথে, সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যেতে।"
"এ সিদ্ধান্ত ক্রিটিক্যাল ছিল। প্রথমবারের মতো বড় ধরনের কোনো পদক্ষেপ ইসি নিয়েছে এবং এটা যথেষ্ট সেনসেশন ক্রিয়েট করেছে সর্বমহলে। এটা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য হয়েছে।"
দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিষয়ে সিইসি বলেন, "আমরা তদন্ত কমিটি করেছি, রিপোর্টটা আসুক। তারপর দেখতে পাবেন।"
এদিকে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক থাকায়, ইভিএমের চেয়ে সিসিটিভিতে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন।
"দেড়শো আসনের জন্য ইভিএম যে বাজেটে কিনবেন, তারচেয়ে ভালো হবে যতটুকু পারেন সিসিটিভি লাগান। ইভিএমে সুক্ষ্ম কারচুপি হয়, পেপার ব্যালটে ভোট চুরি করলেও সহজে ধরা যায়," বলেন তিনি।