অবৈধ স্বর্ণের বার দেশে আসা বন্ধ হলে অর্থপাচার কমবে: বাজুস
অবৈধভাবে স্বর্ণের বার দেশে নিয়ে আসা বন্ধ হলে অনেকাংশেই অর্থপাচার কমবে। পাশাপাশি ডলার সংকট নিরসনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে বাজুসের এক বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়াল।
তিনি বলেন, 'আমরা স্বর্ণের চোরাচালান বন্ধে উপজেলা পর্যায়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এই চোরাচালান রোধে বিএফআইইউ'র সহযোগিতা কামনা করছি। বিএফআইইউ আমাদের আশ্বস্ত করছে সবধরনের সহযোগিতা করবে।'
'বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাজুস একসঙ্গে কাজ করবে। আমাদের প্রথম কাজ হবে দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। এছাড়া বিএফআইইউ'র সঙ্গে সব ধরনের তথ্য বিনিময় করবো। এতে আমাদের কাজ আরও সহজ হবে।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'যদি বাজুসের কোনো সদস্য স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে সংগঠনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।' তাদের ৪০ হাজার সদস্যের মধ্যে এখনও পর্যন্ত কেউ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত নেই বলে দাবি করে তিনি।
সভায় বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস বলেন, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়নের মতো আন্তর্জাতিক সমস্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থান রয়েছে। দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সরকার 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বিএফআইইউ এর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
সভায় বাজুসের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, 'আমরা ধারণা করছি প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে সারাদেশের জল, স্থল ও আকাশপথে প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। যা ৩৬৫ দিন বা একবছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।'
সভায় সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে ৭ প্রস্তাবনা তুলে ধরে বাজুস।
সোনা চোরাচালান ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং চোরাকারবারীদের চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাজুসের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করা দরকার।
চোরাকারবারীরা যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা।
সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেমন বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের জোরালো অভিযান নিশ্চিত করা।
চোরাচালান প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সমূহের সদস্যদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সংস্থা সমূহের সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলঙ্কার আনার সুবিধার অপব্যবহারের কারণে ডলার সঙ্কট, চোরাচালান ও মানি লন্ডারিং-এ কী প্রভাব পড়ছে, তা নিরূপণে বাজুসকে যুক্ত করে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা।
অবৈধ উপায়ে কোন চোরাকারবারি যেন সোনার বার বা অলংকার দেশে আনতে এবং বিদেশে পাচার করতে না পারে সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা সমূহকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান।
জল, স্থল ও আকাশপথ ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে কেউ যাতে সোনার বার বা অলংকার আনতে না পারে এজন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।