যে ৩ কারণে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি
২৬ শর্তে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি-কে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), তবে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, তিন কারণে আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নয়া পল্টনে করতে চান তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ নিয়ে কথা বলেছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে।
তিনি জানিয়েছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য ছোট প্রবেশ গেট, সংকীর্ণ জায়গা আর আওয়ামী লীগের স্থায়ী মঞ্চ থাকাকে প্রধান প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করছে দলটি।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, "সমাবেশে অনেক মানুষ আসবে। এত মানুষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ছোট গেট দিয়ে সমাবেশস্থলে কীভাবে যাবে?"
"সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থল ছোট, তাছাড়া এত সংখ্যক নেতা-কর্মীর সমাবেশস্থলে ঢোকা ও বের হওয়া কঠিন।"
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বনায়ন ও বিভিন্ন স্থাপনার কারণে সমাবেশস্থলের জায়গা সংকুচিত হয়ে আসা নয়া পল্টনে সমাবেশ করতে চাওয়ার দ্বিতীয় কারণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নয়া পল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও পার্শ্ববর্তী সড়কে বড় জায়গা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "নয়া পল্টন এলাকায় সমাবেশে আগতদের জায়গার সংকুলান হবে ভালোভাবে।"
এছাড়া, সমাবেশের ৫-৬ দিন আগে থেকে মঞ্চ তৈরির কাজ করতে হয় জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, একই স্থানে ৮ ও ৯ নভেম্বর ছাত্রলীগের কাউন্সিল নির্ধারণ করা হয়েছিল, এরফলে সমাবেশের আগাম প্রস্তুতি নিতে সমস্যার মুখে পড়বেন তারা। এটি নয়া পল্টনে সমাবেশ করতে চাওয়ার তৃতীয় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
গত ২৭ নভেম্বর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন, ছাত্রলীগের ৩০ তম জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তন করে ৬ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিএনপির সমাবেশের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
তিন দিনে সমাবেশের মঞ্চ তৈরি সম্ভব না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কাউন্সিল ৬ তারিখে এগিয়ে আনলেও ৩ দিনে সব প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব না।
"এর আগে নয়া পল্টনে অনেক সমাবেশ ও মহাসমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে কোনো সমস্যা হয়নি।
"নয়া পল্টনের সুবিধা হলো উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ করা যাবে। সমাবেশস্থলের চতুর্পাশ খোলামেলা, আসা-যাওয়ায় সুবিধা হবে নেতা-কর্মীদের", বলেন তিনি।
এছাড়া, সোহরাওয়ার্দীতে বিভিন্ন স্থাপনা ও আওয়ামী লীগের লাগাতার কর্মসূচির স্থায়ী মঞ্চের কারণে সেখানে সমাবেশ করা সমস্যাজনক বলে মনে করছে দলটি।
গত ১৫ নভেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। সমাবেশের অনুমতির আবেদন নিয়ে ওইদিন বিএনপির কয়েকজন নেতা ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।
নয়া পল্টনে সমাবেশ হলে যানজটে জনদুর্ভোগ তৈরি হবে বলে সেখানে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি ডিএমপি। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) ডিএমপি জানায়, দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি-কে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।