১০ম এসএমই মেলায় পণ্যের সর্বোচ্চ বিক্রি ও অর্ডার লাভ উদ্যোক্তাদের
ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ১০ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা-২০২২। ১০ দিনব্যাপী এবারের এ মেলায় পণ্য বিক্রি হয়েছে ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকার এবং বিক্রেতারা পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন ১৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার, যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় সর্বোচ্চ।
ইসরাত জাহান চৌধুরী 'তুলিকা' ব্র্যান্ড নিয়ে এবার পঞ্চমবারের মতো মেলায় স্টল দিয়েছেন। তিনি টিবিএসকে বলেন, "বিগত বছরের তুলনায় এবার আমার সবচেয়ে বেশি বিক্রি ও অর্ডার হয়েছে। বিক্রি ৩ লাখ টাকার এবং অর্ডার পেয়েছি প্রায় ৬ লাখ টাকার। সবমিলিয়ে আমি এবার সন্তুষ্ট।"
'ড্রাই ফুডে'র বিক্রেতা মোস্তফা কামাল বলেন, "আমিও অনেক আনন্দিত এবারের মেলায় অন্যবারের তুলনায় বিক্রি বেশি হওয়ায়। আমার বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকার পণ্য এবং অর্ডার পেয়েছি ২ লাখের মতো।"
২৪ নভেম্বর শুরু হওয়া এ মেলার শেষ দিন ছিল গতকাল শনিবার। শুক্রবার ছুটির দিন এবং শনিবার মেলার শেষ দিন ছিল ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় । বিক্রেতারাও পণ্য বিক্রি করতে পেরে খুশি। বিকেলে মেলা ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি স্টলে ভিড়। ক্রেতা দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। শেষ দিকে যারা মেলায় এসেছেন প্রায় সবাই কিছু না কিছু কিনেছেন।
পরিবার নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসা বেসরকারি চাকুরিজীবি আবাস উদ্দিন বলেন, "পণ্যগুলো শতভাগ দেশি, বৈচিত্র্যময় এবং গুণগত মানও অনেক ভালো, আমি প্রায় ১৫ হাজার টাকার পণ্য কিনেছি, মা এবং স্ত্রীর জন্য শাড়িও কিনেছি।"
এছাড়াও গত ১ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মেলা প্রাঙ্গণে স্থাপিত ঋণ ম্যাচমেকিং বুথে '১০ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা'-তে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি ও সহজ অর্থায়ন তরান্বিতকরণে উদ্যোক্তা-ব্যাংকার ম্যাচমেকিং (ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি ও ঋণ আবেদন স্পট এসেসমেন্ট) কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে ১২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ ঋণ আবেদন ফরম ও লিফলেট/ব্রোসিউরসহ অংশগ্রহণ করেন। ঋণ গ্রহণেচ্ছুক শতাধিক উদ্যোক্তা সে কর্মসূচিতে নিবন্ধন করেন, যার মধ্যে ৭২ জন উদ্যোক্তাকে প্রাথমিকভাবে 'শর্টলিস্টেড' করে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক কর্তৃক স্পট এসেসমেন্ট করা হয়। প্রাথমিকভাবে ৫জন উদ্যোক্তার অনুকূলে ঋণ অনুমোদন করা হয় এবং আরো বেশ কিছু উদ্যোক্তা ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। এবারই প্রথম মেলায় তাৎক্ষণিকভাবে আবেদন মূল্যায়ন করে উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণও করা হয়।
এছাড়াও মেলায় বিক্রি, পণ্যের মান ও পণ্যের উপস্থাপনার উপর ভিত্তি করে শেষ দিন ১১টি ব্রান্ডকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক), লিম্বস ইঞ্জিনিয়ারিং গ্লোবেক্স, আর আর ইম্পেরিয়াল ইলেকট্রিক্যাবলস লি., স্যামো লেদার, আনা ফ্যাশন, হাত বক্স, ঐক্য ডট কম ডট বিডি, দি ইস্টার্ন পিকেল কোম্পানি লি., ঘিওর বাঁশ বেত শিল্প ক্লাস্টার, টিগাও কারুশিল্প ফ্যাশন এবং বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশন।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎসাহিতকরণ, প্রচার-প্রসারের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন দশমবারের মতো এ মেলার আয়োজন সম্পন্ন করলো। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত শতভাগ দেশী পণ্যের এই মেলায় ৩২৫টি প্রতিষ্ঠানের ৩৫০টি স্টল ছিল।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, "গত বছরের তুলনায় এবার আমরা বেশি বিক্রি ও অর্ডার পেয়েছি, গত বছর বিক্রি ছিল ১০ কোটি, এবার বেড়ে হয়েছে ১২ কোটির অধিক এবং গতবছর অর্ডার পেয়েছি ১৭ কোটি, এবার তা হয়েছে ১৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার । এছাড়াও এবারের পণ্যের মান, উপস্থাপন এবং ক্রেতাদের রিভিউ সবই গত বছর থেকে বেশি পেয়েছি।"