বিএনপির ৭ এমপি চলে যাওয়ায় সংসদ অচল হবে না: ওবায়দুল কাদের
বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলে সংসদ অচল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকালে সাভারের রেডিও কলোনি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত আওয়ামীলীগের এক সমাবেশে তিনি বলেন, 'আমাদের অনেক আইনপ্রণেতা রয়েছে। সংসদে ৪৫ জনের বেশি বিরোধী দলীয় এমপিও রয়েছে। তাই আপনাদের সাতজন চলে গেলে জাতীয় সংসদ অচল হয়ে যাবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।'
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'খালেদা জিয়া কোথায়? ১০ তারিখ তো প্রায় শেষ।'
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'এখন তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। সব ফাঁস হয়ে গেছে।'
এসময় যুক্তরাজ্যের আইনজীবী টবি ক্যাডম্যানের নাম উল্লেখ করে আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তিনি আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে নিজে বলেছেন, 'আমি (টবি ক্যাডম্যান) যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রে লবিং করেছি যেন বাংলাদেশের পুলিশ ও র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্র্র আমার কথা শুনেছে, কিন্তু যুক্তরাজ্য শোনেনি।'
'এসব কাহিনী আর কত করবেন, তারেক রহমানের আর কত টাকা আছে (?)। লবিস্ট নিয়োগ করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। সকালে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য সুখবর এসেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য এসেছে খারাপ খবর। আজকে সকালে খবর পেয়েছি, যুক্তরাষ্ট্র্র ৯টি দেশের ৪০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই তালিকায় বাংলাদেশ নাই', তিনি যোগ করেন।
এসময় গোলাপবাগে বিএনপির আজকের সমাবেশ থেকে ৭ সংসদ সদস্যের পদত্যাগের ঘোষণার কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমাদের অনেক সদস্য রয়েছে। সুতরাং আপনারা ৭ জন গেলে জাতীয় সংসদ অচল হয়ে পড়বে এটা ভাবার কোনো কারণ নাই।'
তিনি বলেন, 'যে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন সে আজ শেখ হাসিনার উদারতায় নিজের বাসায় অবস্থান করছেন। বিএনপি বলেছিল, ১০ তারিখের জনসভায় খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকবেন, কোথায় আজ খালেদা জিয়া ? ১০ তারিখ তো প্রায় শেষ।'
এসময় আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এটা বিজয়ের মাস, স্বাধীনতার মাস, এই মুক্তিযুদ্ধের মাসে রাজাকার-আলবদরদের বিশ্বস্ত ঠিকানা বিএনপি জয়ী হতে পারেনা। খেলা হবে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে, অস্ত্র পাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে।'
এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ আওয়ামীলীগের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ আয়োজিত এই জনসভায় অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, এডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ অন্যান্যরা।
আয়োজিত এই জনসভা বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের পালটা সমাবেশ নয় দাবি করে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড'কে বলেন, 'আমরা আজকের সমাবেশের মধ্য দিয়ে প্রমা্ণ করতে চাই বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশী। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত আছে। বিএনপি-জামায়াত দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এই সমাবেশে উপস্থিতির মাধমে আমরা প্রমাণ করতে চাই দেশের মানুষ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি তারা আস্থাশীল'।
এর আগে জনসভা উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে আওয়ামীলীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জনসভা স্থলে যোগ দেয়।
জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ঢাকা-২০ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব বেনজির আহমেদ, ঢাকা-১৯ আসনের সাংসদ ও ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ, সাভার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাসিনা দৌলা, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব, সাভার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গনি, আশুলিয়া থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিনসহ স্থানীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।