রমজানে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে চান ব্যবসায়ীরা
আসন্ন রমজানে রাত ৮টার পরিবর্তে ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে চান বাংলাদেশ দোকান মালিকরা। একইসঙ্গে ১৫ রোজার পর থেকে ঈদের আগ পর্যন্ত যতক্ষণ ক্রেতা, ততক্ষণ দোকান খোলা রেখে পণ্য বিক্রির সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান এসব ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইনউনিটিতে ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দোকান মালিকরা এসব দাবি করেন। এ সময় লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান টিপু।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দোকান ব্যবসায়ীদের বেচাবিক্রি হয় সাধারণত মাগরিবের নামাজের পর। সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে বর্তমানে রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এই ক্ষতি পোষানোর জন্য ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার দাবি করা হয়।
১৫ রোজার পর থেকেই সাধারণত পোষাকের মার্কেটগুলোতে ঈদের কেনাকাটা বাড়তে থাকে। এজন্য ব্যবসায়ীরা ঈদের আগ পর্যন্ত যতক্ষণ ক্রেতা, ততক্ষণ মার্কেট খোলা রাখার অনুমতি চান সরকারের কাছে।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে রোজার মাসে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানের বিষয়ে আরিফুর রহমান টিপু বলেন, "দোকান ব্যবসায়ী কোন পণ্য উৎপাদন বা আমদানি করে না। দোকান ব্যবসায়ীদের পক্ষে সিন্ডিকেট করাও সম্ভব না। সিন্ডিকেট পরিচালনা করে দেশের সর্বোচ্চ ১৫-২০ জন আমদানিকারক এবং উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তি বা অভিযান পরিচালিত হলে দ্রব্যমূল্যের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে আমরা মনে করি।"
তিনি বলেন, "ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানকে আমরা স্বাগত জানাই। প্রকৃত মজুদকারীদের শাস্তি হোক তা আমরা চাই। তবে অভিযানের আগে একজন ডিলার, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা কত কেজি পণ্য বা কত পরিমাণ পণ্য মজুদ রাখতে পারবে তার একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। যার ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকারের অভিযান পরিচালিত হবে।"
দোকান ব্যবসায়ীদের দাবি, ডিলার, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা কর্তৃক পণ্যের ক্রয় মূল্য সরকার নির্ধারিত দামের বেশি হলে বিক্রেতা বা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপ করতে হবে।
এছাড়া যেসব খুচরা দোকানি পণ্যের মূল্য তালিকা টাঙাবে না তাদের বিরুদ্ধে অধিদপ্তর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে ব্যবসায়ীরা সরকারের পক্ষেই থাকবে। সভাপতি আরিফুর রহমান টিপু পাইকারী ও খুচরা বিক্রয়ের উপর নিট মুনাফার হার ঠিক করে দেওয়ারও দাবি করেন।
তবে বর্তমানে খুচরা দোকানগুলোতে চিনি, ছোলা, ডাল ও দুধের সরবরাহে ঘাটতি আছে দাবি করে ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে কোন সংকট হচ্ছে কিনা তা সরকারের নজরদারি করা উচিত।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে দোকান ব্যবসায়ীরা ভ্যাট আইন সহজীকরণ করার দাবি করেন। তারা বলেন, ৫০ লাখ টাকার টার্নওভারের উপরের সকল দোকান ব্যবসায়ী বর্তমান আইন অনুযায়ী মোট বিক্রয় মূল্যের উপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রদান করে। এটাকে সহজ করে নীট মুনাফার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাটের বিধান করার দাবি করেন তারা।