২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হয়নি।
তিনি বলেন, 'আমরা মনে করি এই ঘটনার যেভাবে তদন্ত হওয়া উচিত ছিল এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী ও মূল হোতাদের বের করে আনার জন্য যেভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া চালানো উচিত ছিল, দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি।'
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনার ১৪তম বার্ষিকীতে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে বনানী সেনা কবরস্থানে স্থাপিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত করেছে, কিন্তু জাতি এখনো সেই তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পায়নি। বিদ্রোহ ও পরবর্তী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন যে একই ঘটনার সঙ্গে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা আরেকটি মামলার বিচার এখনও শেষ হয়নি। তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) অনেক সৈনিক যারা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে, তারা এখনও কারাগারে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
ফখরুল বলেন, 'কয়েকদিন আগে আমি কারাগারে ছিলাম। সেখানে দেখলাম, এই মামলায় আসামি করা অনেক প্রাক্তন বিডিআর সদস্য ১৩/১৪ বছর ধরে অমানবিক জীবনযাপন করছেন। তাদের পরিবার ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে গেছে।'
তিনি সরকারের কাছে বিস্ফোরক মামলার বিচার সম্পন্ন করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান, যাতে যারা নির্দোষ, তারা তাদের পরিবার নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর এর একটি বিদ্রোহী দল পিলখানা সদর দপ্তরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে।
৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে ঢাকার একটি আদালত এ মামলায় ১৫০ বিডিআর সদস্য ও দুই বেসামরিক নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট ১৫২ আসামির মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করে।
পিলখানা সদর দপ্তরে সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর, সরকার বিদ্রোহ-বিধ্বস্ত আধা-সামরিক বাহিনী বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখে এবং এর লোগো ও ইউনিফর্ম পরিবর্তন করে।
ফখরুল সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কবরস্থানে গিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং নিহত সেনা কর্মকর্তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
বিএনপির এই নেতা নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তাদেরকে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতির সম্পদ হিসেবে বর্ণনা করেন।
বিদ্রোহে নিহত তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়ার সঙ্গেও তিনি কথা বলেন।