মেয়েদের নিয়ে এখনই দেশ ছাড়তে পারবেন না জাপানি মা
জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ সময়ের মধ্যে যে যেখানে যেভাবে আছে, সেভাবেই (স্ট্যাটাসকো) থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) এই আদেশ দেন।
এ সময় আপিল বিভাগ বলেন, "সব সমস্যার সমাধান আদালতে হয় না। দুই শিশুর অভিভাবকই ডেসপারেট, উল্টো আমরা বিপদে আছি।"
আদালতে শিশুদের বাবার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আকতার ইমাম। আর মায়ের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি। আজ শুনানিকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন দুই শিশুর জাপানি মা নাকানো এরিকো।
এর আগে বাবা ইমরানের করা মামলাটি গত ২৯ জানুয়ারি খারিজ করে রায় দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান। দুই মেয়েকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন। ছোট মেয়ে শুরু থেকে বাবার কাছেই রয়েছে। তাকে উদ্ধারে মা গুলশান থানায় জিডি করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত ২ ফেব্রুয়ারি তাকে আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আদালত খাস কামরায় ছোট মেয়ে লায়লা লিনার বক্তব্য শোনেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একদিন বাবার কাছে এবং আরেকদিন মায়ের কাছে থাকার আদেশ দেন আদালত। এরই মধ্যে পারিবারিক আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার জেলা জজ আদালতে আপিল করেন বাবা ইমরান শরীফ। পরে জেলা জজ আদালত আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। এই আপিলটিই আজ সর্বোচ্চ আদালত তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছেন।
২০০৮ সালে জাপানে এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। তাদের তিনটি কন্যাসন্তান আছে। বিয়ের বারো বছর পর ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান।
স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের চিঠি দেওয়ার পর সন্তানদের অভিভাবকত্ব নিয়ে জাপানের পারিবারিক আদালতে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি মামলা করেন ইমরান। ওই বছরই বড় ও মেজো মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।
কিন্তু দুই মেয়েকে ফিরে পেতে একই বছরের ১৯ আগস্ট ঢাকায় এসে হাইকোর্টে রিট করেন মা এরিকো।
মামলা চলমান অবস্থায় গত ২৪ ডিসেম্বর মেয়েদের নিয়ে দেশ ছাড়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এরিকোকে থামানো হয়। পরে এরিকো সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি পারিবারিক আদালতে থাকা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চান।