চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ বিভিন্ন পদ থেকে ১৭ শিক্ষকের পদত্যাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ, ও আবাসিক শিক্ষকসহ ১৮টি প্রশাসনিক পদ থেকে ১৭ শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। রোববার (১২ মার্চ) ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তারা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে. এম. নূর আহমদের নিকট এ পদত্যাগ পত্র জমা দেন।
এর দু্ই ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আজিম সিকদারকে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রেজিস্ট্রার কে. এম. নূর আহমদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তারা পদত্যাগ করেছেন। প্রক্টর হিসেবে নতুন একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
পদত্যাগ করা শিক্ষকদের মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডির ছয় জন, একজন প্রাধ্যক্ষ এবং ১০ জন আবাসিক শিক্ষক রয়েছেন। এর আগে প্রক্টরিয়াল বডিতে মোট ১১ জন ছিলেন। এখন নতুন একজনকে প্রক্টর এবং আরও দুজনকে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৭ মার্চ সহকারী প্রক্টর মরিয়ম ইসলাম রিজাও পদত্যাগ করেন। গত বছরের নভেম্বরে পদত্যাগ করেন তৎকালীন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাষ্য, শিক্ষক রাজনীতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের অনুসারী দুটি পক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডির নেতৃত্বে একটি পক্ষ এবং দুজন সিন্ডিকেট সদস্যের নেতৃত্বে অপর পক্ষ পরিচালিত হয়। নিয়োগ, পদোন্নতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন উভয় পক্ষ। দুই পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল দীর্ঘদিনের। সর্বশেষ গত তিন মাসে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যকার দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে।
এ বিষয়ে জানতে পদত্যাগ করা দুজন শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে পরবর্তী পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়। এরপর অনুমোদনহীন নিয়োগ, শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ লেনদেন নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত সহকারীর ফোনালাপ ফাঁস হলে সমালোচিত হন তিনি।
২০১৯ সালের ১৩ জুন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার চৌধুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ার দুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে রুটিন দায়িত্ব পালন করতে বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ প্রথম নারী উপ-উপাচার্য হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের এ অধ্যাপক।