বিএনপিকে পাঠানো চিঠি সরকারের কুটকৌশল নয়, অনানুষ্ঠানিক আলোচনার আমন্ত্রণ: সিইসি
বিএনপিকে পাঠানো ইলেকশন কমিশনের অনানুষ্ঠানিক চিঠিটি সরকারের কোন কুটকৌশল নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
আজ (২৮ মার্চ) নির্বাচন ভবনে বিএনপিকে পাঠানো অনানুষ্ঠানিক চিঠির বিষয়টি স্পষ্ট করতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, "আমরা একটা অনানুষ্ঠানিক পত্র বিএনপির মহাসচিব মহোদয়কে উদ্দেশ্য করে পাঠিয়েছি। চিঠিতে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম যে আনুষ্ঠানিক নয়, অন্তত অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আপনারা অংশগ্রহণ করতে পারেন- এভাবে অনুরোধ করে।"
বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় চিঠিটা দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
"মূল বিষয় ছিল, আমরা কিন্তু তাদেরকে সংলাপে আহ্বান করিনি। সংলাপ বিষয়টা আনুষ্ঠানিক। আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আপনারা আসতে পারেন," বলেন সিইসি।
"আমরা অত্যন্ত বিনীতভাবে এই আমন্ত্রণ তাদেরকে জানিয়েছি। কিন্তু অনেকে বলছেন এটা সরকারের একটি কুটকৌশল।"
"আমরা পুরো জাতিকে অবহিত করতে চাই, আশ্বস্ত করতে চাই যে, এই পত্রের সাথে সরকারের কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা নেই এবং ছিল না। যদি কেউ এটাকে কুটকৌশল মনে করতে চান, এটা তাহলে নির্বাচন কমিশনের হতে পারে, সরকারের নয়। আর নির্বাচন কমিশন কখনই কূটকৌশল হিসেবে এই কাজটি করেনি," যোগ করেন তিনি।
"আপনারা অবহিত আছেন নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহনমুলক এবং কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে," বলেন তিনি।
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে বর্তমান ইসি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা সংলাপ করেছে। তবে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ নেয়নি।
মির্জা ফখরুল শনিবার বলেছেন, বিএনপিকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চিঠি আসলে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে আরেকটি নির্বাচন করার জন্য সরকারের সর্বশেষ কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।
সিইসি বলেন, "আমরা বলেছি আপনাদের (বিএনপি) যে কৌশল তার উপর আমাদের কোন মন্তব্য থাকবে না। তারপরেও আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাই। আলোচনার ফল ইতিবাচক হতেও পারে, নাও হতে পারে, কিন্তু প্রয়াস গঠন করতে বাধা থাকা উচিত নয়।"
হাবিবুল আউয়াল আরো বলেন, "নির্বাচন কমিশন মনে করে গণতন্ত্রের স্বার্থে, নির্বাচনের স্বার্থে এবং দলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। সংসদীয় গণতন্ত্রে দলীয় শাসনটাই হচ্ছে মুখ্য। বিদ্রোহী প্রার্থী বা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ক্যান্ডিডেটদের দ্বারা কখনোই সরকার গঠন করা সম্ভব হয় না। সেজন্য আমাদের লক্ষ্য আমাদের দলগুলো চর্চার মাধ্যমে আরো সমৃদ্ধ হোক, আরো সংহত হোক।"
"দেশে দলীয় চর্চা ও সাংস্কৃতির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার আরও সংহত হোক সেটা আমাদের প্রথম দিন থেকেই সদিচ্ছা। এই সদিচ্ছার প্রতিফলন আমরা সব সময় ঘটানোর চেষ্টা করেছি। যদি কোন ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে সেটার যেন নিরসন হয়।"
তিনি বলেন, "আমরা পাঁচজন কমিশনার আমরা এখানে আছি, নির্বাচনের বিষয় নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি, আলোচনা করছি--আমাদের চিন্তার মধ্য দিয়ে এটা ফুটে উঠেছে যে বিএনপির মত একটি দলকে নির্বাচনে আনতে পারলে ভালো হয়।"
যদি বিএনপি আসে এবং কোন এজেন্ডা ঠিক করে দেয় তাহলে কী করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, "ওনারা যদি কোন এজেন্ডা ঠিক করে দেয় তখন কমিশন সমন্বিতভাবে সিদ্ধান্ত নেবে।"