গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিরনিদ্রায় শায়িত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ঢাকার সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রাঙ্গণে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সহস্র কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও হাজারো শুভাকাঙ্ক্ষীর অশ্রু জলে শেষ বিদায় নিলেন দেশের এই কিংবদন্তি।
শুক্রবার দুপুর ৩টা নাগাদ সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রাঙ্গণে সূচনা ভবন সংলগ্ন স্থানে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সমাহিত করা হয়।
জানাজা ও দাফনে রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থী, তার নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে দুপুর আড়াইটায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ মাঠে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ৫ম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরীন হক, ছেলে বারিশ হাসান চৌধুরী, মেয়ে বৃষ্টি চৌধুরীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও এর বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
জানাজায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ছেলে বারিশ হাসান চৌধুরী সকলের উদ্দেশে বলেন, 'আমার মরহুম বাবার সাথে কারও কোন লেনদেন যদি থেকে থাকে কিংবা কেউ কিছু পেয়ে থাকলে তারা যেন আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন।'
তিনি বলেন, 'আমার বাবা মেডিকেল সায়েন্সের কল্যাণে দেহদান করে যেতে চেয়েছিলেন। আমরা বাবার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করেছিলাম। আমরা প্রতিষ্ঠিত দু'টি প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু তারা বাবাকে অনেক শ্রদ্ধা করেন। তারা বলেছেন আমার বাবার শরীরে কেউ ছুরি চালাতে পারবেন না। শ্রদ্ধার জায়গা থেকে তারা বলেছে।'
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে একটি ফ্রিজার ভ্যানে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আনা হয় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ।
সকাল থেকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে জড়ো হন হাজারো মানুষ। এসময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, "ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান আমরা কখনোই ভুলবোনা। তিনি সারাজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। আজ দেশে ঔষধ শিল্পে যে বিপ্লব, সেখানেও তার অবদান অসামান্য। তার চলে যাওয়াটা খুবই কষ্টকর, এক অপূরণীয় ক্ষতি।"
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, "ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ভালো মানুষ ছিলেন, স্পষ্টভাষী মানুষ ছিলেন। মানুষের প্রয়োজনে তিনি কথা বলতে দ্বিধাবোধ করতেন না। তিনি মানুষের প্রয়োজনে ছুটে যেতেন। তার চলে যাওয়াটা খুব কষ্টের।"
আজ সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে অন্যান্যের মধ্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, ট্রাস্টি সন্ধ্যা রায়, ডা. আবুল কাশেম চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান মঞ্জুর কাদের আহমেদ, প্রেস উপদেষ্টা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সাংসদ ডা. দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন বাবু, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা-২০ আসনের সাংসদ বেনজির আহমেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নইম জাহাঙ্গীর, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক প্রমুখ।