লোডশেডিংয়ে রাজশাহীর বোরো আবাদে পানির সংকট
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেণীপুর গ্রামের কৃষক মাজহারুল ইসলাম তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। কিন্তু অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে জমিতে পানি দিতে না পারায় ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
মাজহারুল ইসলাম বলেন, শনিবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে। বাকি সময়টাই লোডশেডিং। ধানের জমিতে পানি দিতে না পেরে জমি ফেটে গেছে।
শুধু মাজহারুলের জমিই নয়, উপজেলার অনেক কৃষক লোডশেডিংয়ের কারণে পানি দিতে না পারায় ধানের ফলন হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এছাড়া বাঘা উপজেলায় প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও লোডশেডিংয়ের কারণে কৃষি জমিতে পানি দিতে না পারায় ধান চিটা হয়ে গেছে।
গোদাগাড়ীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে থাকে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, রাজশাহীতে রোববারও ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ তীব্র তাপপ্রবাহের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। ফলে মানুষজন ঘরে-বাইরে সর্বত্র দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
রাজশাহী শহরেও গড়ে আট থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। রাজশাহীর বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুবেল ইসলাম বলেন, রাতে পাঁচ থেকে সাতবার বিদ্যুৎ গেছে। লোডশেডিংয়ের কারণে ঘুমও হচ্ছে না। তীব্র গরমে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এদিকে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আমের গুটি ঝরে পড়ছে।
নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো)-এর প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ জানান, 'রাজশাহী বিভাগে আমাদের ৫০০ থেকে ৫২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। সেখানে আমরা পাচ্ছি ৪৫০ থেকে ৪৬০ মেগাওয়াট।'
রাজশাহী শহরে বিদ্যুতের চাহিদা ১০০ মেগাওয়াট হলেও কেবল ৭০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছেন বলে জানান তিনি। 'এজন্য প্রতিদিন আট থেকে ১০ বার লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গড়ে ৫০ থেকে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে,' বলেন রশিদ।