কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূলে ট্রলার বোঝাই লাশ, ১০ মরদেহ উদ্ধার
কক্সবাজারের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে আসা একটি ডুবন্ত ট্রলার থেকে ১০টি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, মরদেহ আরও বাড়তে পারে।
রবিবার দুপুরে ট্রলারটি ভেসে আসার পর থেকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার তৎপরতার চালিয়ে যাচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, গত ৭ এপ্রিল সাগরে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ১৪ জেলের ১০ জনের মরদেহ হতে পারে এসব।
ঘটনাস্থল থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া জানিয়েছেন, কক্সবাজারের স্থানীয় জেলেরা বঙ্গোপসাগরের গভীরে ফিশিং ট্রলারটি ভাসতে দেখে উপকূলে নিয়ে আসেন। আনার পর ট্রলারের ভেতরে মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ট্রলারটির ভেতরে আর কোনো মরদেহ আছে কি না, তা জানার জন্য তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উদ্ধার করা নিহত ১১ জনের মধ্যে ৬ জনের হাত-পা বাঁধা ছিল বলে জানা গেছে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ট্রলারের ভেতরে থাকা মরদেহ পচে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কমপক্ষে ১০-১২ দিন আগে ট্রলারটি ডাকাতদলের হাতে আক্রান্ত হয়। ডাকাতরা ট্রলারের মাছ ও জাল লুট করে জেলেদের হাত-পা বেঁধে হিমঘরে আটকে রেখে ট্রলারটি সাগরে ডুবিয়ে দিতে পারে।
তিমি বলেন, সব মরদেহ ফিশিং ট্রলারের কোল্ড স্টোরেজের (হিমঘর) ভেতরে ছিল। মৃতদের কারও পরিচয় এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সূত্রে জানা গেছে, গভীর সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটি আরেকটি মাছ ধরার ট্রলারের সঙ্গে আটকে গিয়েছিল। তখন ওই ট্রলারের জেলেরা ডুবন্ত ট্রলারটিকে রশি দিয়ে টেনে মহেশখালীর সোনাদিয়া চ্যানেলে পর্যন্ত নিয়ে আসে। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে ডুবন্ত ট্রলারটি নাজিরারটেক চ্যানেলে পৌঁছায়। তখনই ওই ট্রলারে নিহতদের হাত-পা ভেসে ওঠে। এতে টেনে আনা ট্রলারের জেলেরা ভয় পেয়ে পালিয়ে যান। এরপর স্থানীয় লোকজন পুলিশকে লাশ বোঝাই ট্রলার ভেসে আসার খবর জানায়। দুপুর ২টার দিকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।
ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, 'মহেশখালীতে নিখোঁজের একটি তথ্য শোনা যাচ্ছে। তাদের খবর পাঠানো হচ্ছে। তবে মরদেহ পচে যাওয়ায় শনাক্ত করা কষ্ট হতে পারে।'
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার শামসুল আলম তার নিজস্ব মালিকানাধীন একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ১৪ মাঝিমাল্লাসহ সাগরে মাছ ধরতে যান।
এর ৩ দিন পর ১০ এপ্রিল সাগর থেকে মাছ ধরে ফিরে আসা কালারমার ছড়া ইউনিয়নের আধাঁরঘোনা গ্রামের বাবু জানান, ওই ট্রলারের ১৪ মাঝিমাল্লা অপর একটি ট্রলারকে ডাকাতি করার অভিযোগে কয়েকটি ট্রলার ঘিরে আটকে ফেলে। এরপর ১৪ জনকে হিমঘরে আটকে দিয়ে ট্রলারটি ডুবিয়ে দেয়। ওই ট্রলারের বাবুর আপন ভাই হায়াত উল্লাহও রয়েছেন।
এরপর থেকে ট্রলার বোটের মালিক শামসুল আলম সহ ১৪ মাঝিমাল্লা নিখোঁজ রয়েছেন।