এবার পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া গেছে। যা রেকর্ড পরিমাণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা। চার মাস পর শনিবার (৬ মে) সকালে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলার পর দিনভর চলে টাকা গণনার কাজ।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, টাকা ছাড়াও কিছু বৈদেশিক মুদ্রা এবং স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে দানবাক্সগুলোতে। মানুষের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ পাগলা মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা এবং এতিমখানায় অনুদান প্রদানসহ সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হবে।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন চার কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা এবং কিছু বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।
এবার টাকা গণনার কাজে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ. টি. এম. ফরহাদ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ, পাগলা মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান এবং রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলামসহ প্রমুখ অংশ নেন।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। এরপর দানবাক্সের টাকাগুলো ১৯টি বস্তায় ভরে নেওয়া হয় গণনার জন্য। পরে গণনা শেষে রাতে টাকা পরিমাণ জানান জেলা প্রশাসক।
জনশ্রুতি রয়েছে, আধ্যাত্মিক এক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝপথে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। সব ধর্মের মানুষের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন স্থানীয়রা। মানত কিংবা দান করলে মনের বাসনা পূরণ হয় — এমন বিশ্বাস থেকে মানুষজন বিভিন্ন মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে। তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার এবং গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি দান করেন।