নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে, তা নির্ভর করছে ইসি’র ওপর: বিশিষ্টজনদের অভিমত
বিশিষ্টজনরা বলেছেন, দেশের আসন্ন ৫ সিটি কর্পোরেশ নির্বাচন ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে, তা নির্ভর করছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর। কারণ নির্বাচনকালীন সরকারসহ নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে চলে যায়।
শনিবার (৬মে) রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড আয়োজিত 'কেমন হবে সিটি নির্বাচন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তারা বলেন, নির্বাচনের যে বিধিবিধান আছে, যে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে নির্বাচন হওয়া দরকার, যে আইন-কানুন আছে- সেটা পালনে নির্বাচন কমিশন অবহেলা করলে নির্বাচন সুষ্ঠ হবে না।
এজন্য নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বচান অনুষ্ঠানে যথাযথ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
প্রশাসন নির্বাচনে কোনো ভূমিকা পালন করে না, জানিয়ে সাবেক সচিব জিল্লার রহমান বলেন, "প্রশাসনে যারা চাকরি করেন, তারা চাকরিজীবী। সিদ্ধান্তটা নেয় নির্বাচন কমিশন ও যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই সরকার। যখন নির্বাচন চলে তখন এই নির্বাচনের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তারা সবাই নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে চলে যায়। আমার বক্তব্য এখানে সরকারের তেমন কোনো কর্মকাণ্ড থাকে না।"
সরকার চাইলে ভালো নির্বাচন হয়, না চাইলে হয় না-মন্তব্য করে বৈঠকে সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাইদ খান বলেন, "ভালো নির্বাচন বলতে যা বোঝায় অংশগ্রহণমূলক এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। কিন্তু এটি সম্ভব নয়, কারণ ভেতরে অনেক সমস্যা রয়েছে। এ কারণে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের মনে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে।"
সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের 'উইন্ডো ডিসপ্লে' হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, "সুতরাং বড় নির্বাচনের আগে এই নির্বাচনে যেমন সরকারি দলের অবস্থান আছে, তেমনই বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিরও একটা অবস্থান থাকার কথা। তারা নির্বাচন বর্জন করে কিন্তু কিছু অর্জন করছে না। আমার মনে হয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেও এই বিরোধিতা করা যেত।"
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, "আমাদের দেশে এখনও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল গড়ে উঠতে পারেনি। তাই সরকারি দল বা বিরোধীদল উভয় থেকেই বিদ্রোহী প্রার্থী আছে। এই রাজনৈতিক বাস্তবতা মেনে নিতে হবে।"
রাষ্ট্র বিজ্ঞানী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশীদ বলেন, "বিরোধীদল যদি জয়লাভ করে তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, বিরোধীদল জয়লাভ না করলে সুষ্ঠু হয় নাই, এই ধরনের একটা মানসিকতা আমাদের মাঝে তৈরি হয়েছে।এটি থেকে বেরিয়ে আসা দরকার।"
গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালনা করেন এডিটরস গিল্ডের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য রেজোয়ানুল হক।
আলোচনায় আরও অংশ নেন মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী খুশী কবির, নগর পরিকল্পনাবীদ স্থপতি ইকবাল হাবিব ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম।