এমন গরম থাকবে আরও ৩ দিন
মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে দেশের ৪০টিরও বেশি জেলায়। আবহাওয়ার অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বিরাজমান তাপমাত্রা আগামী ৩ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। কাজেই এমন গরম আরও ৩ দিন থাকতে পারে, এমনকি বাড়তেও পারে।
তবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ১৩ বা ১৪ মে-র আগে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই এরকম গরম আরও ৫-৬ দিন থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ কামরুল হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এই গরমের মধ্যেই সাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে, যা সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে। ১৩ বা ১৪ মে এটি স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। তার আগে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
'আর বৃষ্টি না হলে গরমও কমবে না এবং গরমের পরিধিও বাড়তে পারে। অর্থাৎ আরো বেশি জায়গায় গরম ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমরা এপ্রিলের শুরুতে এ বছর কম বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছিলাম, কিন্তু বৃষ্টিপাত হয়েছে তার চেয়েও কম। আর বৃষ্টিপাত না হওয়াই গরম বেড়ে যাওয়ার কারণ।'
কামরুল আরও বলেন. 'এপ্রিল ও মে আমাদের দেশে সবচেয়ে গরম মাস। কারণ এ সময় বাংলাদেশ সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকে। আর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, মানে রাজশাহী, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা সবচেয়ে বেশি গরম হওয়ার কারণ এর পশ্চিমে আছে বিস্তৃত সমভূমি। তাই তাপপ্রবাহের যে তিনটি পদ্ধতি রয়েছে—পরিবহন, পরিচলন ও বিকিরণ—সেগুলোর তাপ প্রবাহিত হয় পরিবহন পদ্ধতিতে। ফলে সরাসরি তাপ লাগে আর পুরো অঞ্চল তপ্ত হয়ে ওঠে। অন্যবারের তুলনায় এবার তাপপ্রবাহ চলছে বেশিদিন ধরে। এখন ঘূর্ণিঝড় ও তার পরবর্তী বৃষ্টিপাতের জন্যই অপেক্ষা করতে হচ্ছে।'
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আজ ৮ মে দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক হুমায়ূন কবীরের উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, আগামী ১৩, ১৪, ১৫ মে-র মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণেই আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ—এই তিন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।'
উল্লেখ্য, আজ সকাল ৯ টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হতে পারে। পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলার উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে ও বিস্তার লাভ করতে পারে।