লাউয়াছড়ায় ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া বনে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
শনিবার (২০ মে) ভোর ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে মাস্টার সাখাওয়াত হোসেন।
আপাতত সিলেটের সাথে চট্টগ্রাম ও ঢাকার রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, "যতটুকু জানা গেছে, রাতে ঝড় বৃষ্টি হয়েছিল, যার কারণে রেল লাইনের উপর গাছ হেলে পড়ে। ট্রেন আসায় ট্রেনের বগির সাথে ধাক্কা লেগে ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়।"
কুলাউড়া থেকে আসা রিলিফ ট্রেন উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী আলমগীর হোসাইনী বলেন, "খুব বাজেভাবে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে গেছে।"
লাউয়াছড়া অভয়ারণ্যের মাঝামাঝি জায়গায় এই ঘটনা ঘটে। এতে সিলেটগামী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন বলে জানান তিনি।
বিকেলে সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ চালু হতে পারে
সিলেটগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৩টি বগি উদ্ধার করতে কাজ করছে রেলওয়ে। তবে কত সময় লাগবে তা নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে আরও ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগবে।
রেলওয়ে কুলাউড়া উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান বিষয়টি জানিয়ে বলেন, "উদ্ধারকারী ইঞ্জিন চলে এসেছে। গাছগুলো কেটে সরানো হয়েছে। লাইনচ্যুত বগি উদ্ধার হতে হতে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বেজে যেতে পারে।"
তিনি আরো বলেন, "ট্রেনের অধিকাংশ যাত্রী শায়েস্তাগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের স্টেশনে নেমে যাওয়ার কারণে যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।"
তিনি জানান, ট্রেনটি চলমান থাকা অবস্থায় ট্রেন থেকে মাত্র ২০ গজ সামনে একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ে। চালক ইমার্জেন্সি ব্রেক চাপলেও ট্রেনটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুলাউড়া থেকে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন ও পরে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আখাউড়া থেকে আরও একটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।
উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক ওমর ফারুক বলেন, "লাউয়াছড়ার ভেতরে ট্রেন খুবই ধীরে চলছিল। এ জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা গেছে। চালক ইমার্জেন্সি ব্রেক চাপায় ট্রেনের যাত্রীরা রক্ষা পেয়েছেন। ট্রেনটি ধীরে ধীরে উল্টে যায়। সে কারণে যাত্রীরা দ্রুত বের হয়ে আসতে পারেন। এ দুর্ঘটনায় কোনো হতাহত নেই।"
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার সহকারী পরিদর্শক সাব্বির বলেন, "ফায়ার সার্ভিস, রেলপুলিশ ও জেলা পুলিশ—সবাই মিলে ট্রেনের যাত্রীদের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে বের করে পাশের সড়কে নিয়ে অন্য গাড়িতে তুলে দেয়। সবার নিরাপদে গন্তব্যে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।"