নিঃসন্দেহে জনগণের টাকা লুটপাটের জন্য এটি একটি স্মার্ট বাজেট: বিএনপি
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে জনগণের টাকা লুটপাটে স্মার্ট হিসেবে বর্ণনা করেছে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, 'এটি অবশ্যই একটি স্মার্ট বাজেট। বর্তমান সরকারের চেয়ে কোনো সরকারই লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করতে পারে না। বাজেটের সুবিধা নিয়ে বর্তমান সরকারের চেয়ে স্মার্টভাবে ব্যাংক ও জনগণের টাকা কেউ লুট করতে পারবে না।'
বৃহস্পতিবার (১ জুন) সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী খসরু তার বনানীর বাসায় প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে দলের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, নতুন বাজেট সরকারকে জনগণের টাকা লুটপাটের বিভিন্ন সিন্ডিকেট চালাতেও সহায়তা করবে। 'সুতরাং, নিঃসন্দেহে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি খুব স্মার্ট বাজেট।'
তিনি বলেন, দেশের মানুষও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের স্মার্ট বাজেটের জবাব দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
তিনি আরও বলেন, 'সরকার পৃষ্ঠপোষক-ক্লায়েন্ট সম্পর্কের নীতি নিয়ে জনগণের অর্থ লুট করার জন্য একটি অর্থনৈতিক মডেল তৈরি করেছে। এই অর্থনৈতিক মডেলের ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মানে যারা ক্ষমতাসীন দলের সদস্য বা সরকারের পৃষ্ঠপোষক; তারা এই বাজেট থেকে উপকৃত হবেন, সাধারণ মানুষ নয়।'
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক কৌশল কর চাওয়া, কমিশন ও চাঁদাবাজি নীতির ওপর ভিত্তি করে। 'তারা (আ.লীগ নেতা) যে কোনো কাজে কর, চাঁদা ও কমিশন নেবে। এটি অর্থনীতি ও বাজেটের ভিত্তি এবং জনগণ এর প্রধান ভুক্তভোগী। সব প্রতিষ্ঠানই লুণ্ঠনের উপযোগী হয়ে উঠেছে।'পৃষ্ঠপোষক-ক্লায়েন্ট সম্পর্ক ব্যবস্থা, কর আদায় নীতি এবং শোষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের সমগ্র অর্থনীতিকে চালিত করছে।'
খসরু বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন হলে সরকার সমর্থিত মহল আরও ধনী হবে এবং সাধারণ মানুষ আরও দরিদ্র হবে।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট লুণ্ঠনকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিএনপির আমলে স্থিতিশীল অবস্থানে থাকা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে। 'তাই মানুষ দরিদ্র হচ্ছে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান হারাচ্ছে।'
তিনি বলেন, জনগণ যখন বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে, তখন সরকার করের জাল বাড়িয়ে তাদের ওপর নতুন করে বোঝা চাপিয়েছে। 'যারা দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে ধনী হচ্ছেন তারা কর দেন না, কারণ তারা অবৈধভাবে তাদের অর্থ বিদেশে পাচার করে ও দেশে ডলার সংকট তৈরি করে। আর ডলারের ঘাটতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।'
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্যান্য ব্যাংক ও বাহ্যিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়ায় গত সাত বছরে সরকারের ঋণ বেড়েছে ৫২ শতাংশ। এই ঋণ শোধ করতে হবে নতুন প্রজন্মকে।
খসরু বলেন, বাংলাদেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতি উদ্ধারে রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। 'রাজনৈতিক সমাধান মানে বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠা করা।'
তিনি বলেন, বাজেট জনগণের চিন্তার প্রতিফলন এবং রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলন। 'একটি অবৈধ দখলদার সরকার ক্ষমতায় থাকায় জনগণের রাজনৈতিক চিন্তা বাজেটে প্রতিফলিত হবে না।'
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, এই বাজেট মূল্যস্ফীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমাতে সাহায্য করবে না, কারণ লুটপাট ও অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই।